1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাষ্ট্রপতির সংলাপে সমাধান দেখছে না বিএনপি

১৫ ডিসেম্বর ২০২১

নির্বাচন কমিশনের জন্য "সার্চ কমিটি” গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে কোনো সমাধান দেখছে না বিএনপি। বিএনপি মনে করে সংলাপের নামে আওয়ামী লীগের পছন্দেই নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।

https://p.dw.com/p/44IsM
Bangladesch l Präsident Abdul Hamid
ছবি: Narayan Maharjan/Nur Photo/picture alliance

আওয়ামী লীগ মনে করে সংলাপের মাধ্যমে অধিকতর নিরপেক্ষ  নির্বাচন কমিশন  গঠন সম্ভব। আর আওয়ামী লীগের শরীকেরা চান নির্বাচন কমিশন আইন।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয় জানিয়েছে, ২০ ডিসেম্বর সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হবে। সংলাপে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে গতবার যে ৩১টি দলকে ডাকা হয়েছিলো তারা আমন্ত্রণ পাবেন আগে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানান, গণভন থেকে তাদের ২০ ডিসেম্বর বিকেলে সংলাপের কথা জানানো হয়েছে। তারা সংলাপে যাবেন। তবে এখনো চিঠি না পাওয়ায় সংলাপে নির্বাচন কমিশনের কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তা তারা  জানেন না৷ তিনি বলেন," চিঠি পাওয়ার পর আমরা আমাদের আলোচনার অবস্থান ঠিক করব। কোন বিষয়ে জোর দেবে সে সিদ্ধান্ত নেব। নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও স্বাধীন করার জন্য আমরা আগেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আইনের দাবি করেছিলাম। আমাদের সে দাবি তো মানা হল না। সেই দাবি আমরা আবারো তুলব।”

সংলাপে কত সদস্যের প্রতিনিধি দল যেতে পারবে তাও এখনো জানানো হয়নি বলে জানান জাতীয় পার্টির এই নেতা।

এদিকে বিএনপিও এখনো সংলাপের কোনো চিঠি বা মৌখিক আমন্ত্রণ পায়নি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন,"আমরা চিঠি পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেব যে রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাব কী না। তবে গতবারের সংলাপে কোনো লাভ হয়নি। আমাদের কাছ থেকে তালিকা নেয়া হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পছন্দেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাই এই সংলাপেও কোনো ফল আসবে না বলেই আমরা মনে করি।”

খায়রুল কবির খোকন

তিনি বলেন,"আমাদের অবস্থান আমরা আগেই পরিষ্কার করেছি। আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে এখন ভাবছি না, ভাবছি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে। আমরা দলীয় কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই ধরনের নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হওয়ার পর তাদের অধীনেই নতুন নির্বাচন কমিশন হবে।”

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই জানুয়ারির মধ্যেই রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের এই সংলাপ শেষ করতে চান। এর আগে ২০১২ এবং ২০১৭ সালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল।

২০১৮ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের( তখন তিনি আপিল বিভাগের বিচারক ছিলেন) নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করেন। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাঁচটি করে নাম চায়। সেখান থেকে ১০ নামের তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়। রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ও চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম এবং শাহাদাৎ হোসেনকে নিয়োগ দেন। এদের মধ্যে তিনজনই শাসক দল আওয়ামী লীগের জোট ১৪ দলের শরীক তরিকত ফেডারেশনের প্রস্তাব করা।

সংবিধানে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির। এই সার্চ কমিটি গঠনের কথা সংবিধানে নেই। তবে সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন আইন করার কথা আছে। কিন্তু গত ৫০ বছরেও এই আইন করা হয়নি। এবার আবারো বিভিন্ন মহল থেকে এই আইনের দাবি উঠলেও সরকার সময় নেই বলে তা নাকচ করে দিয়েছে।

১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া বলেন," আমরা এখনো আমন্ত্রণ পাইনি। তবে আমরা সংলাপে যাব। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে আমরা নির্বাচন কমিশন আইনের কথা বলব, দাবি তুলব। এই আইন না হলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। আইন না হলে তারা প্রশাসনের অধীনেই থাকে।”

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিএনপির যে সিদ্ধান্ত সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"এটা তো তাদের রাজনৈতিক কথা। আমার ধারণা তারা নির্বাচনে যাবে। বিএনপি কখন কী কথা বলে তার তো ঠিক নেই।”

মাহবুব উল আলম হানিফ

আওয়ামী লীগও এখনো সংলাপের আমন্ত্রণ পায়নি। জানা গেছে পর্যায়ক্রমে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে ডাকা হবে। আওয়ামী লীগকে সংলাপের মাঝামাঝি সময়ে এবং বিএনপিকে কয়েকটি দলের সংলাপ হয়ে যাওয়ার পর আমন্ত্রণ জানানো হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন,"বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন। তবুও এই সংলাপের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি চেষ্টা করছেন নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে কমিশন গঠনের। আমাদের সবার উচিত তার এই কাজে সহযোগিতা করা।”

বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"বিএনপি  সব সময়ই দলীয়করণ করে আসছে। তাই চোরের মনে পুলিশ পুলিশ। বর্তমান কমিশনে আওয়ামী লীগের প্রস্তাব থেকে একজন আছেন। বিএনপির প্রস্তাবিতও একজন আছেন। তাদের মতামতকে তো গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখন তারা যাদের চাইবে তাদের সবাইকে নিয়েই তো নির্বাচন কমিশন করা যায় না।”

তার কথা,"নির্বাচন কমিশন তো স্বাধীন। সেখানে সরকারের কী করার আছে?”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য