1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রিকশামুক্ত ঢাকা: সিদ্ধান্ত যৌক্তিক কিন্তু পরিকল্পনার অভাব

৯ জুলাই ২০১৯

যানজটে নাকাল নগরবাসীকে মুক্তি দিতে রিকশা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন৷ আর নগরবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হাঁটার অভ্যাস গড়ার পরামর্শ দিয়েছে শহররে উত্তর সিটি করপোরেশন৷

https://p.dw.com/p/3Lo3Q
Bangladesch - Fahrer bemalt seine Rikscha in den Farben Argentiniens
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগরীকে পুরোপুরি রিকশামুক্ত করা হবে।  উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।''

৭ জুলাই থেকে কুড়িল-বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ রেলগেট-খিলগাঁও রেলগেট-মানিকনগর-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আসাদগেট-সায়েন্সল্যাব-আজিমপুর এবং সায়েন্সল্যাব- শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দুই নগরপিতা৷

প্রতিবাদে গত দু'দিন ধরে রিকশা চালকরা বাড্ডা ও রামরপুরাসহ কয়েকটি এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন। জাতীয় রিকশা ভ্যান শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইনসুর আলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় দেড় লাখ রিকশা চালক বেকার হয়ে যাবে। আমরা বলেছি, রিকশা বন্ধ না করে অবৈধ রিকশা উচ্ছেদ করা হোক।''

রিকশা চালকদের এই নেতা জানান, ঢাকায় ১০ লাখে মধ্যে বৈধতা আছে দুই লাখের কিছু বেশি রিকশার৷

শিক্ষার্থী, নারী ও শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য আমরা বিকল্প চিন্তা করছি: আতিকুল ইসলাম

এ প্রসঙ্গে উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ''ঢাকা শহরে মোট সড়কের পরিমান ২০ হাজার কিলোমিটারের বেশি। আর দুই সিটি করপোরেশন মিলে মাত্র ২০ কিলোমিটার এলকায় রিকশা চলাচাল বন্ধ করেছি৷ ভেতরের সড়কে রিকশা চলবে। তাই রিকশাচালকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।''

রিকশা বন্ধের ঘোষণায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে সাধারণ মানুষেরা৷ বিশেষ করে শিক্ষার্থী, রোগী, প্রতিবন্ধী এবং নারীরা বিরূপ এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা ক্ষুব্ধ৷

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘শিক্ষার্থী, নারী ও শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য আমরা বিকল্প চিন্তা করছি। আমরা স্কুল বাস চালু করব। নারীদের বাসের কথা চিন্তা করছি। আমাদের ভালো কিছু পেতে হলে কিছুটা ত্যাগ করতে হবে। ফুটপাথগুলো ঠিক করছি। হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।'

বাস মালিক সমিতিকে বলেছি, প্রয়োজনে নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী স্টপেজ বাড়ানো হবে:

দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘‘রিকশার বিকল্প হিসেবে এখন রাইড শেয়রিং সেবা পাঠাও , উবার আছে। আমরা সার্কুলার বাস চালু করেছি। আমরা বাস মালিক সমিতিকে বলেছি, যেখানে প্রয়োজন সেখানে পর্যাপ্ত বাস সার্ভিস নিশ্চিত করবো। প্রয়োজনে নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী স্টপেজ বাড়ানো হবে। স্কুল ভ্যানগুলোকে আমরা চলাচলের অনুমতি দিচ্ছি। আর শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্যতো বাস আসে। ভালো কোনো সাজেশন থাকলে তাও আমরা গ্রহণ করবো।''

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''আমরা ধীরে ধীরে ঢাকা শহর থেকে রিকশা তুলে দেব। ঢাকায় কোনো রিকশা থাকবেনা। এজন্য সময় লাগবে। তারই প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি।''

রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে রিকশা তুলে দেয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘যৌক্তিক' মনে করছেন নগর পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল হক৷ তবে তাঁর দাবি, এই সিদ্ধান্ত হুট করে নেয়া হয়েছে৷

তিনি বলেন, ‘‘২০০৫ সাল থেকে কৌশলগত পরিকল্পনায় ছিলো প্রধান সড়ক থেকে রিকশা তুলে দেয়া। রিকশা আর বাস একই সড়কে চলবেনা। নগরবাসী ভেতরের সড়কে রিকশা ব্যবহার করে বাস স্ট্যান্ডে আসবেন। কিন্তু এরজন্য পরিকল্পনা দরকার। কোলকাতা শহরে এটা দু'বছরে করা হয়েছে। প্রচার চালানো হয়েছে । রিকশাচালকদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে।''

প্রথম পর্যায়ে রিকশার সংখ্যা কমিয়ে আনা দরকার ছিলো মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ৷ তিনি মনে করেন, নারীসহ আরো যারা বাসের পরিবর্তে রিকশা পছন্দ করেন তাদের আগে তৈরি করা উচিত৷

এদিকে, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে মহাসড়কে ধীর গতির যান চলাচলে আলাদা লেন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য