1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোজার বাজার: দাম বাড়ানোর অজুহাত ‘হাজার’

৩০ এপ্রিল ২০২১

১২ এপ্রিল ছয়টি ভোগ্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার৷ কিন্তু রোজা শুরুর আগে বেঁধে দেয়া সেই দামে কোথাও ওই ছয়টি পণ্য পাওয়া যাচ্ছেরনা৷ ব্যবসায়ীদের কথা, সরকারের কথায় বাজার চলে না, সরকারি দামে পণ্য বিক্রি করা যায় না৷

https://p.dw.com/p/3soOe
Bangladesch Karwan Bazar
ছবি: DW/M. Mamun

ওই ছয়টি পণ্যের মধ্যে একটি ভোজ্য তেল৷ এর দাম পুরো বাজার গরম করে দিয়েছে৷ বিশেষ করে সয়াবিন তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷
কৃষি অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম হবে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা, চিনি ৬৭ থেকে ৬৮ টাকা, ছোলা ৬৩ থেকে ৬৭ টাকা, মসুর ডাল (উন্নত মানের) দাম হবে ৯৭ থেকে ১০৩ টাকা ও সাধারণ মোটা মসুরের ৬১ থেকে ৬৫ টাকা, সাধারণ মানের খেজুর ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং মধ্যম মানের ২০০ থেকে ২৫০ টাকা এবং সয়াবিন তেল লিটার ১৩৯ টাকা৷

এর মধ্যে কেনো পণ্যই নির্ধারিত দামে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না৷ কলাবাগানের দোকানদার মিন্টু মিয়া জানান, ‘‘এখন ছোলার দাম ৮০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৪০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল খোলা ও বোতলজাত একই দাম- ১৪৫ টাকা লিটার, মসুর ডাল ১২০ টাকা কেজি, চিনি ৭৫ টাকা, খেজুর কেজি ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা৷ তার কথা, ‘‘সরকারের কথায় বাজার চলে না৷ আমরা যেভাবে কিনি, সেভাবে বিক্রি করি৷’’

‘বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই’

গত বছরের আগস্টে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ছিল ১০৬ টাকা৷ কয়েক দফায় বেড়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হয়ে যায় ১৩৪ টাকা আর রোজার মাসে হলো ১৪৫ টাকা৷

আরেক দোকানদার রহিম মিয়া বলেন, ‘‘এখন সবচেয়ে অস্থির হলো ভোজ্য তেলের বাজার৷ বিশেষ করে সয়াবিন৷ খোলা তেলের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন৷ এখন খোলা আর বোতলজাত ভোজ্য তেলের দাম একই৷ বোতলজাত তেলের দাম বাড়াতে একটু সময় লাগে৷ পরিস্থিতি যা, তাতে এই রোজার মাসেই আবার ভোজ্য তেলের দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি৷’’


শুক্রাবাদের ক্রেতা মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘‘শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিম সব কিছুর দামই বেড়েছে৷ পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহে কেজি ৩৫ টাকায় নেমেছিল, এখন আবার তা ৪০-৪৫ টাকা হয়েছে৷’’

তার কথায়, ‘‘করোনায় এমনিতেই সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নাই, কাজ নাই৷ তার ওপর এই রোজায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা সাধরণ মানুষ বিপাকে আছি৷’’

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘‘বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও কোনো পণ্য পাওয়া যায় না৷ আমরা ভোক্তা অধিকারকে বলছি৷ তারা কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না৷ বাজার মনিটরিংও তেমন দৃশ্যমান নয়৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ভোজ্য তেলের দাম সরকারই কয়েকবার বাড়িয়ে দিয়েছে৷ তারপরও নির্ধারিত দামে পাওয়া যায় না৷ এখন প্রতি লিটারে বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে পাঁচ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে৷’’

‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়ছে’

ব্যবসায়ীরা এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দামবেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন৷ বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, ‘‘সয়াবিন এবং পাম অয়েল পুরোটাই আমদানিনির্ভর৷ ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় এখানকার বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে৷’’

তার মতে, ‘‘খোলা তেলের দাম দ্রুত বাড়ে, কারণ, এটা ডে টু ডে বজারের ওপর নির্ভরশীল৷ আর বোতলজাত তেলের দাম বাড়তে সময় লাগে, কারণ, এটা একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দামে বোতলজাত করা হয়৷’’

তবে ভোক্তদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লেই এখানে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়৷ নতুন আমদানির জন্য অপেক্ষা করা হয় না৷
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার বাজার মনিটরিংয়ের জন্য বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে৷ মনিটরিং টিম করেছে ২৮টি৷ মোবাইল কোর্টও কাজ করছে৷ বাজারে ভোগ্যপণ্যের দামের বিষয়ে কথা বলার জন্য বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি৷