রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বিয়ে
শরণার্থী শিবির, তাতে কী? সেখানে তো কোনো আনন্দ আয়োজনে বাধা নেই! শফিকা আর সাদ্দাম তাই নিজেদের নতুন জীবন শুরু করলেন আশ্রয় শিবিরেই৷ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই দু’জন রোহিঙ্গা শরণার্থী গত মাসের শেষে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন৷
আনন্দের সেই দিন
শফিকার বয়স ১৮ বছর৷ বিয়ের ঠিক আগে ফটোগ্রাফারকে বিয়ের আংটি আর হাতের মেহেদি দেখাচ্ছেন তিনি৷ অনেকেরই বিশ্বাস, মেহেদির রং নব-দম্পতির জীবনকে রঙিন করে এবং জীবনে খুশির বার্তা নিয়ে আসে৷
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
বর সাদ্দামের বয়স ২৩ বছর৷ তিনি বিয়ের আসরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন৷ শফিকার সাথে তাঁর বাল্যকালের প্রেম৷ তাঁরা মিয়ানমারের গ্রাম ফয়রা বাজারে থাকতেন৷ কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাঁদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়৷ তবে সেখান থেকে পালিয়ে আসার আগেই তাঁদের বিয়ের সবকিছু ঠিক ছিল৷
বিদায়ের অশ্রু
এখন বিয়েটা হচ্ছে, তবে নিজের দেশে নয়৷ আত্মীয়-পরিজনরা ঘিরে রেখেছে নবপরিণীতাকে৷ বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার মতোই, শফিকা এখন এই তাঁবু ছেড়ে বরের তাঁবুতে গিয়ে উঠবেন৷
অতিথিদের আগমন
বিয়ে উপলক্ষ্যে অন্যান্য শরণার্থী শিবির থেকে অতিথিরা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন৷ শফিকা এবং সাদ্দাম মাত্র তিন মাস আগে বাংলাদেশে আসেন৷ সে সময় কুতুপালং আশ্রয়কেন্দ্রে জরুরি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা৷
আল্লাহর নামে শপথ
অন্যান্য ইসলামি বিয়ের মতোই এই বিয়ের রীতি-নীতি একই ছিল৷ একজন ইমাম তাঁদের বিয়ে পড়ান৷ পরে শফিকা এবং সাদ্দাম আল্লাহ’র উদ্দেশে শুকরিয়া আদায় করে প্রার্থনা করেন৷
বিয়ের অনুষ্ঠান
ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তরুণরা নেচে গেয়ে অতিথিদের আনন্দ দেন৷ নাচ-গানের মধ্য দিয়ে যেন তাঁরা তাঁদের কষ্টের কথা কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুলে যান৷
স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তন
বিয়ের পাঁচদিন পর শরণার্থী শিবিরে নতুন জীবন শুরু করেছেন নব-দম্পতি৷ সাদ্দাম রাস্তার পাশে ওষুধ বিক্রি করেন আর শফিকা বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকেন৷
আশার আলো
আরো অনেক শরণার্থীদের মতোই এই নব-দম্পতির আশা একসময় তাঁরা নিজেদের বাড়িতে নিরাপদে ফিরে যেতে পারবেন৷