সেনা সদস্য প্রত্যাহারের আহ্বান
২০ মে ২০১৪তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার আব্দুর রশিদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, এরকম বিছিন্ন কথা বলে পরিস্থিতিকে আরো জটিল করা হচ্ছে৷ র্যাবকে সঠিক পথে আনতে একটি সর্বাত্মক সংস্কার প্রয়োজন৷
র্যাবের মোট সদস্যের ৪০ ভাগ সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর৷ এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরাও প্রথাগতভাবে সেনাবাহিনীর হয়ে থাকেন৷ যদিও র্যাব পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে পুলিশের একটি আলাদা ব্যাটেলিয়ন, যা ২০০৪ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে৷
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্রসফায়ারের কারণে র্যাব নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে বিতর্ক চলছে৷ আর সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাব চরম বিতর্কের মুখে পড়েছে৷ এই ঘটনায় র্যাবের তিনজন সেনা এবং নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷
নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া র্যাব বাতিলের দাবি জানান৷ আর মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা র্যাব থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে৷ সেনাবাহিনীর উচিত হবে তাদের সব সদস্যকে র্যাব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া৷ আমরা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল দেখতে চাই৷''
তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার আব্দুর রশিদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘র্যাব নিয়ে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে বিচ্ছিন্ন কোনো প্রস্তাব দিয়ে লাভ নেই৷ একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে র্যাবের সাংগঠনিক কাঠামো, আইনগত দিক, জবাবদিহিতাসহ সব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে৷ সেই প্রতিবেদনের আলোকেই র্যাবকে সংস্কার বা পুনর্গঠন করা যায়৷'' তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়েছে৷ এর সুবিধা এবং অসুবিধা বিশ্লেষণ করা দরকার৷ প্রয়োজনে র্যাবকে একটি পূর্ণাঙ্গ বাহিনী করে এর নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়কে স্থায়ী রূপ দেয়া যায়৷''
তিনি বলেন, ‘‘ক্রসফায়ার বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্যা শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারত, পাকিস্তান এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও আছে৷ তারা কিভাবে এই সমস্যা মোকাবিলা করছে তা আমাদের দেখা দরকার৷ আর ঐসব দেশেও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে আলাদা বাহিনী আছে৷''
ব্রিগেডিয়ার রশিদ বলেন, ‘‘একটি বাহিনীর কতিপয় সদস্যের অপরাধে যেমন পুরো বাহিনীকে দায়ী করা যায় না৷ তেমনি বাহিনীর কার্যপদ্ধতি ও জবাবদিহিতার মধ্যে কোনো ত্রুটি আছে কিনা, তাও দেখা প্রয়োজন৷ বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে সমস্যার সমাধান হয় না বরং পরিস্থিতি আরো জটিল হয়৷''