লন্ডন অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশিসহ নিখোঁজ অনেকে
১৪ জুন ২০১৭লন্ডনে বহুতল যে ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, সেখানে বসবাসরত একটি বাঙালি পরিবারের খোঁজ মেলেনি ২৪ ঘণ্টা পরও৷ অগ্নিকাণ্ডস্থল গ্রেনফেল টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে কমরু মিয়া, তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকতেন৷ তাদের কারও মোবাইল ফোনেই রাত আড়াইটার পর থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না৷ কমরু মিয়ার মেয়ে হোসনার বিয়ে আগামী ২৯ শে জুলাই৷
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের কমিশনার ড্যানি কটন জানিয়েছেন, তাঁর ২৯ বছরের চাকরিজীবনে এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আর দেখেননি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এই ঘটনায় অনেক প্রাণহানি ঘটেছে৷ কতজন নিহত হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়৷''
ড্যানি আরও জানিয়েছেন, ভবনটির তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত৷ তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানাতে পারেনি দমকলবাহিনী৷ ফায়ারব্রিগেডের কর্মীরা ভীষণ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷
ভবনটি থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে৷ ভবনটি যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে এই আশংকায় পুরো এলাকা ঘিরে রেখে সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ৷ লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এই দুর্ঘটনাকে ‘ভয়াবহ' বলে উল্লেখ করেছেন৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভবনের ভেতর থেকে তাঁরা মানুষের আর্তচিৎকার শুনতে পেয়েছেন৷ জানালায় অনেক মানুষকে দাঁড়িয়ে থেকে সাহায্যের আবেদন করতে দেখা গেছে৷
ঘটনাস্থল থেকে একজন টেলিভিশন প্রতিবেদক বিবিসি রেডিওকে জানান, ভবনের একেবারে উপরের তলায় অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন এবং টর্চ জ্বালিয়ে সাহায্যের আবেদন করছিলেন, কিন্তু বেরিয়ে আসার কোনো পথ ছিল না৷
আগুন দোতলা থেকে ২৪ তলা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে৷ ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা ২০০ দমকলকর্মী এবং ৪০টি ফায়ার ইঞ্জিন কাজে লাগিয়েছেন৷ লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড একসাথে কাজ করছে৷ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং হাসপাতালে দ্রুত আহতদের পৌঁছে দেয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ অনেক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ফায়ার এক্সিটেও আগুন ছড়িয়ে পড়ায় উদ্ধার কাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
গত বছরই ভবনটির বাসিন্দারা কর্তৃপক্ষকে ভবনটির অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন৷ ভবনটিতে ১২০টি অ্যাপার্টমেন্টে অন্তত ৫০০ মানুষ অবস্থান করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)