লিবিয়ায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানির দায়িত্ব স্বীকার ন্যাটোর
২০ জুন ২০১১প্রায় তিন মাস ধরে লিবিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশ থেকে গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ন্যাটো৷ তাদের এসব হামলার লক্ষ্যবস্তু মূলত লিবীয় নেতা গাদ্দাফির অনুগত সামরিক বাহিনী এবং তাদের সমরাস্ত্র ভাণ্ডার৷ কিন্তু আকাশ থেকে এসব হামলার লক্ষ্য বিচ্যুতি ঘটছে মাঝেমাঝেই৷ ইতিমধ্যে ন্যাটোর হামলায় গাদ্দাফির এক ছেলে এবং নাতির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ এমনকি দেশটির যেই বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়ে সেখানে অভিযান শুরু করে ন্যাটো তাদের উপরই কয়েক দফা ভুল হামলার অভিযোগ উঠেছে৷ সম্প্রতি দু'দিন আগেই ব্রেগা শহরে এমন ভুল হামলায় বিদ্রোহীদের প্রাণহানির কথাও স্বীকার করেছে ন্যাটো৷ আর এবার ত্রিপোলিতে ন্যাটো হামলায় নয় জন বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির অভিযোগ ওঠার পর প্রথমবারের মতো তাদের হামলায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে এই সামরিক জোট৷
ন্যাটোর বক্তব্য
তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ন্যাটো৷ এক বিবৃতিতে লিবিয়ার অভিযানে ন্যাটো কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল শার্ল বুশার বলেন, নিরপরাধ এসব মানুষের মৃত্যুতে ন্যাটো মর্মাহত এবং নিজ দেশের মানুষের উপর সহিংসতায় লিপ্ত সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানে আরো সতর্কতা অবলম্বন করবে তারা৷ ন্যাটো বাহিনীর অস্ত্র চালানা যন্ত্রপাতির ত্রুটিকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন বুশার৷
গাদ্দাফি সরকারের প্রতিক্রিয়া
এর আগে ঐ ঘটনায় নিহত নারী-শিশুদের মৃতদেহ সাংবাদিকদের দেখান গাদ্দাফি প্রশাসনের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম৷ এসময় তিনি বলেন, সামরিক জোট বাহিনী অনবরত বেসামরিক মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে৷ যদিও জনবসতি এলাকায় সরকারের সামরিক বাহিনীর কোন স্থাপনাই নেই৷ এছাড়া এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে এর প্রতিবাদ জানান লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দেলাতি ওবাইদি৷ তিনি বলেন, ‘‘ন্যাটো হামলা দেশের সাধারণ মানুষের তেজ ও উদ্দীপনাকে ভেঙে দিচ্ছে এবং একইসাথে গুটি কয়েক সন্ত্রাসীকে শান্তিময় শহরে অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে৷''
অবশ্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ন্যাশনাল ট্র্যানজিশনাল কাউন্সিল - এনটিসি'র উপ-প্রধান আব্দেল হাফিজ ঘোগা এই ঘটনার জন্য গাদ্দাফি প্রশাসনকেও দায়ী করেছেন৷ তাঁর অভিযোগ, সরকার জনবসতির কাছাকাছি এলাকায় সামরিক স্থাপনা তৈরি করার কারণেই সাধারণ মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম