সময়ও শেষ হতে পারে, বলছেন বিজ্ঞানীরা
১৭ অক্টোবর ২০১০মার্কিন এবং জাপানী বিজ্ঞানীদের এই দলটি অবশ্য তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণীকে ৫০ শতাংশের বেশী সম্ভাব্যতা দিতে রাজী নন৷ স্বয়ং সময়, কাল কিংবা মহাকাল যে আগামী ৩৭০ কোটি বছরের মধ্যে শেষ হবে, তার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ, বলে তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণী৷
এই বিজ্ঞানীরা কিন্তু বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সংক্রান্ত একটি বহুদিনের তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করছেন৷ ঐ তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পরিধি ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং অনন্তকাল বাড়তেই থাকবে৷ অবশ্যই এই তত্ত্বের পটভূমিতে রয়েছে সৃষ্টির সূচনার সেই ‘বিগ ব্যাং' বা সুবিশাল বিস্ফোরণ৷ একটি বোমা ফাটলে যেমন টুকরোগুলি ছড়িয়ে পড়তে থাকে, ঠিক তেমনিভাবেই আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের ব্যাস ও পরিধি বেড়ে চলেছে৷
এখন এই গবেষকরা বলছেন, পদার্থবিদ্যার নিয়মাবলী থেকেই বোঝা যায় যে, ব্রহ্মাণ্ডের পরিধি যে অনন্তকাল ধরে বেড়ে চলবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ কেন নেই, তা বুঝতে গেলে অঙ্কে ঢুকতে হবে: পদার্থবিদরা ক্রমবর্ধমান ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে আঁকজোক করতে গিয়ে ‘টাইম কাট-অফ' বলে একটি বস্তু ব্যবহার করেন - অর্থাৎ সময় যখন শেষ হবে, সেই ধরণের একটি তত্ত্বগত ঘটনা৷ এটা আসলে আঁকজোকের একটা পন্থা হলেও, সেটাই শেষে বাস্তব হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে বার্কলে'র ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানী রাফায়েল বুসো এবং তাঁর সতীর্থদের ধারণা৷
বিগ ব্যাং যাবৎ প্রায় ১,৩৭০ কোটি বছর বিগত হয়েছে৷ এতোদিনে বোঝা গেল যে, বিজ্ঞানীরা স্রেফ তাদের অঙ্কের খেলার জন্য যে কাল্পনিক তারিখটা ব্যবহার করছিলেন, সময়ের কবে অন্ত ঘটবে - সময় একটি চরম ঠাট্টায় ঠিক সেইরকম সময়েই উধাও হতে পারে৷ আর সময়ই যদি না থাকে, তবে পৃথিবীটাই বা থাকে কি করে? আমার, আপনার কথা তো বাদ দিলাম৷
তবে ভয় পাবেন না৷ অস্ট্রেলিয়ার মাউন্ট স্ট্রমলো মানমন্দিরের জ্যোতির্বস্তুবিদ চার্লস লাইনউইভার বলেছেন, বুসো আসলে ভুল করেছেন স্ট্যাটিস্টিক্স বা পরিসংখ্যানবিদ্যার একটি পদ্ধতিকে বড় বেশী গুরুত্ব দিয়ে৷ বুসো'র ব্রহ্মাণ্ডের গড় আয়ু নির্দ্দিষ্ট, আর ওটা এসেছে গাণিতিক সম্ভাব্যতা পাবার দুরাশায় সময়ের অন্তের একটি তাত্ত্বিক বিন্দু নির্দ্দেশ করা থেকে৷ আরো সহজ করে বলতে গেলে: সময়ের শেষ অবধারিতভাবে একটি বাস্তব, অর্থাৎ বস্তুগত ঘটনা, এবং তার একটি বস্তুগত কার্যকারণের প্রয়োজন৷ ওটাকে শুধু গণিতের খেলা হিসেবে ধরলে চলবে না৷
কতোটা বুঝলাম, তা জানি না৷ তবে আশ্বস্ত হলাম বৈকি৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম