সহজে সংক্রামিত পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মীরা
১১ মে ২০২০করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার ক্রমশ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে৷ সংক্রমণ ছড়িয়েছে রাজ্যের ২৩টি জেলায়৷ তার মধ্যে সবথেকে বেশি আক্রান্ত কলকাতা৷ রাজ্যের মোট ১৯৩৯টি নথিভুক্ত সংক্রমণের মধ্যে শুধু কলকাতাতেই ৯৪৮ জন৷ ১১৩টি করোনা মৃত্যুর মধ্যে ৭৪টি কলকাতায়৷ করোনার পাশাপাশি মারা যাওয়ার অন্য কারণও ছিল ৭২ জনের৷ এই বাড়তি ৭২টি মৃত্যুর মধ্যে ৫২টি ঘটেছে এই শহরেই৷
এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা, নিরাপত্তা কর্মীরা৷ তাঁদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে৷ কতটা সুরক্ষার বন্দোবস্ত রয়েছে তাঁদের?কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার, হেডকোয়ার্টার্স শুভঙ্কর সিংহ সরকার ডয়চে ভেলে–কে জানালেন, ‘‘যা সেফগার্ড নেওয়ার, সবগুলোই নেওয়া হচ্ছে৷ মাস্ক বলুন, স্যানিটাইজার বলুন, এরিয়া স্যানিটাইজ করা, অফিস স্যানিটাইজ করা, সবই করা হচ্ছে৷ পুলিসরা তো সবসময় ঘরে বসে কাজ করে না, রাস্তাতেই থাকে৷ সবার জন্যে ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷’’
কিন্তু তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রশাসনিক অবস্থান বোঝালেও ভরসা দিল কি?বিশেষত যেখানে ধাপে ধাপে লক ডাউন উঠিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার মুখে শহরে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে!সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় একের পর এক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড বন্ধ করে দিতে হচ্ছে৷ স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের যথেষ্ট সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকার কারণেই এভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে৷ রাস্তায় নেমে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা আরও বিপন্ন বোধ করছেন৷
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ এক্ষেত্রে কী বলছে? নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির অন্যতম সদস্য, চিকিৎসক স্মরজিৎ জানা বলছেন, ‘‘একমাত্র উপায় ওই পিপিই৷ আর কারও কিছু হলে, যদিও এখন সবাই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাচ্ছে৷ কিন্তু আইসিএমআর থেকে আমরা বলে দিয়েছি, শুধুমাত্র হেল্থ প্রফেশনালদের, ‘প্রোফাইল অ্যাক্সিস’ হিসাবে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খেতে৷’’
কিন্তু যথেষ্ট পিপিই কি পাওয়া যাচ্ছে?শুধু কলকাতা, বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশেই স্বাস্থ্যকর্মীদের এই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে৷ ডাঃ জানা–র বক্তব্য, শুধু ভারত নয়, ইউরোপ, আমেরিকাতেও এমন অভিযোগ উঠেছে৷ আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থা কতটা খারাপ, এই পরিস্থিতি সেটা দেখিয়ে দিয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘, it has open up, how bad our health delivery system is! অথচ, আজকে তাইওয়ান, চায়না... তাইওয়ান অনেক পরে হলেও প্রায় ১৬ মিলিয়ন মাস্ক অন্য দেশে দিয়েছে৷ তো তারা পারছে, আর আমাদের বড়লোকের দেশ পারছে না— this is unacceptable from the point of view, that they do not really give importance to people's life. শুধু ডাক্তারদের লাইফ না, পিপল্স লাইফ৷ তার কারণ হচ্ছে, ডাক্তার কমা মানে করোনাতে মৃত্যুর হার বেশি হওয়া৷’’
কাজেই, শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন নয়, সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনকে গুরুত্ব না দিলে যা হয়, তাই ঘটছে৷ বহু প্রাণের অপচয় ঘটছে৷ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, এবং ভারতের ক্ষেত্রে বিপদটা আরও বেশি, যেহেতু এখানে করোনা সবে তার ফণা তুলতে শুরু করেছে৷