সৌদি আরব থেকে হুথি বন্দিদের নিয়ে ইয়েমেনে বিমান
১৫ এপ্রিল ২০২৩এর ফলে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহী এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে সংঘাত শেষ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সৌদি আরবে বন্দি ১২০ জন হুথি বিদ্রোহীকে নিয়ে একটি বিমানের ইয়েমেনের রাজধানী সানায় রওনা দেয়ার কথা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ রেড ক্রস (আইসিআরসি)। সানা এখন ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে।
আইসিআরসি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স এবং মিডিয়া উপদেষ্টা জেসিকা মুসান বলেন, দক্ষিণ সৌদি শহর আভা থেকে বিমানটি স্থানীয় সময় সকাল ৯টার আগেই ১২০ জন সাবেক বন্দিকে নিয়ে রওয়ানা হয়েছে।
রেড ক্রসের মধ্যস্থতায় প্রায় ৯০০ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। মার্চ মাসে ইয়েমেন সরকার ৭০৬ জন হুথি বিদ্রোহীকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ হুথি বিদ্রোহীরা এর বিনিময়ে ১৮১ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানায়৷
বন্দি বিনিময়ের দ্বিতীয় দিন
শনিবার অন্তত তিনটি বাস বন্দিদের আভার বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সৌদি আরব এবং ইয়েমেনের মধ্যে শনিবারের তিনটি ফ্লাইটের মধ্যে এটিই ছিলো প্রথম।
বন্দি বিনিময় সরকারি প্রতিনিধি দলের মুখপাত্র মাজিদ ফাদায়েল বলেন, ১৬ জন সৌদি নাগরিক এবং তিন জন সুদানের নাগরিককে শনিবার সানা থেকে রিয়াদে নিয়ে যাওয়ার কথা হয়েছিল।
শুক্রবার, সরকার-নিয়ন্ত্রিত এডেন এবং হুথি-নিয়ন্ত্রিত সানার মধ্যে চারটি বিমানে ৩১৮ বন্দি ছিলেন। আগামী সপ্তাহের ঈদ আল-ফিতর। তার আগে পরিবারের সঙ্গে সবাই যাতে দেখা করতে পারেন, তাই এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ইয়েমেনের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সাবেক প্রেসিডেন্টের ভাইও রয়েছেন। আইসিআরসি একটি বিবৃতিতে বলেছে, "ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়িত ৯০০ জন বন্দির মধ্যে প্রথম এই দলকে মুক্তি দেয়ার সাক্ষী রইলাম আমরা।''
ইয়েমেনে আট বছরের যুদ্ধ
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। হুথি এবং সরকার দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তি৷ ২০১৪ সাল থেকে রাজধানী সানা সহ ইয়েমেনের উত্তরের অংশ দখল করে রেখেছে হুথিরা৷ ২০১৫ সাল থেকে সৌদির নেতৃত্বাধীন জোটে সঙ্গে তাদের লড়াই চলছে৷ সৌদি নেতৃত্বাধীন নয়টি দেশের এই জোট আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সরকারের সমর্থনে এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করার পর পরিস্থিতি আরো অশান্ত হয়ে ওঠে৷
সম্প্রতি সানায় সৌদি এবং হুথি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পরেবন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছে। সৌদি আরব একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছে কারণ এই ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে যথেষ্ট ব্যয়বহুল।
ইয়েমেনে এই যুদ্ধের কারণে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং স্বাস্থ্যসেবার সমস্যায় জর্জরিত ইয়েমেন। অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও টালমাটাল। সবমিলিয়ে এই বন্দি বিনিময় তাই খানিকটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে।
আরকেসি/এডিকে (এএফপি, এপি)