স্কটল্যান্ড তর্ক-বিতর্ক
৩০ নভেম্বর ২০১৩একদিকে ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়া, অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদ৷ স্পেন, বেলজিয়াম সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ এবার ব্রিটেনের পালা৷ স্কটল্যান্ড ব্রিটেন থেকে আলাদা হতে ২০১৪ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর মাসে গণভোটের আয়োজন করতে চলেছে৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ স্বাধীনতার সপক্ষে রায় দিলে ২০১৬ সালের ২৪শে মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায় স্কটল্যান্ড৷ অর্থাৎ প্রায় ৩০৬ বছর ধরে একসঙ্গে থাকার পর যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারেন স্কটিশরা৷ উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকেই স্কটল্যান্ডের নিজস্ব সংসদ রয়েছে, যেখানে প্রাদেশিক আইন প্রণয়ন করা হয়৷
স্বাধীনতা পেলে স্কটল্যান্ড কেমন দেশ হবে? খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্কটিশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, তাদের কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনাই নেই৷ ৬৭০ পৃষ্ঠার ব্লু-প্রিন্টে শুধু বিচ্ছিন্নতার কথা বলা হয়েছে৷ ক্যামেরনের মতে, ভবিষ্যৎ মুদ্রা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো-র মতো জোটে স্বাধীন স্কটল্যান্ডের ভূমিকা অনিশ্চিত৷ তাছাড়া স্বাধীন হলে স্কটল্যান্ডের মানুষকে এক ধাক্কায় অনেক বেশি কর দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷
ব্রিটেনের তিন প্রধান জাতীয় রাজনৈতিক দল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার বিরোধী৷ তাদের মতে, ৫০ লক্ষ মানুষেরও কম জনসংখ্যার একটি দেশের পক্ষে সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা সহজ হতে পারে না৷ লেবার পার্টির স্কটিশ নেতা আনাস সারওয়ার মনে করেন, স্বাধীনতার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভরা৷
স্কটল্যান্ডের জাতীয় পার্টি এসএনপি-এই উদ্যোগের মূল কাণ্ডারি৷ দলের নেতা অ্যালেক্স স্যালমন্ড মনে করেন, এমন ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিলে স্কটল্যান্ডে সমৃদ্ধি অনেক বেড়ে যাবে৷ তিনি চান, স্কটল্যান্ড ইইউ ও ন্যাটো-র সদস্য হোক৷ এমনকি মুদ্রা হিসেবে পাউন্ড রেখে দেওয়ারও পক্ষে তিনি৷ তবে ব্রিটিশ সরকার মনে করে, এমনটা কার্যক্ষেত্রে সম্ভব হবে না৷ অর্থাৎ ব্রিটেন ও স্বাধীন স্কটল্যান্ডের মধ্যে ‘কারেন্সি ইউনিয়ন'-এর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছে ক্যামেরন-এর প্রশাসন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এপি)