1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘স্টার্টআপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি’

২২ জানুয়ারি ২০১৮

তাঁর তৈরি ‘ডক্টরোলা' এখন বাংলাদেশের ৫৫০টি হাপাতালের আট হাজার চিকিৎসককে এক সূতোয় বেঁধেছে৷ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী আব্দুল মতিন ইমন স্টার্টআপের সমস্যা এবং সম্ভাবনার দিকগুলো তুলে ধরেছেন এই সাক্ষাৎকারে৷  

https://p.dw.com/p/2rD6y
Symbolbild Arzt Tablet App
ছবি: imago/Westend61

ডয়চে ভেলে : বাংলাদেশে স্টার্টআপ এখন পর্য়ন্ত কতটা সম্ভাবনার সৃস্টি করেছে?

আব্দুল মতিন ইমন : আসলে ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্ভবনা বলতে আমার বিবেচনায় সরকারি ও বেসরকারী পর্যায়ে যখন ডিজিটাল টেকনোলজির ব্যবহার বাড়াতে পারব৷ সরকারি পর্যায়ে যেমন অটোমেশনের প্রয়োজন, তেমনি সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়েও অটোমেশনের প্রয়োজন৷ এর অধিকাংশ সমাধান আসবে স্টার্টআপ থেকে৷ এই স্টার্টআপই কিন্তু এক-একটা সমাধানের উদ্যোগ৷

বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্টার্টআপ হতে পারে, এমন উল্লেখযোগ্য কোম্পানি গত পাঁচ বছরে কয়টা হয়েছে?

এটা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন৷ কোনটা ভালো হচ্ছে বা কোনটা বিশ্বে স্থান করে নিতে পারে সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না৷ তবে বেশ কিছু স্টার্টআপ হচ্ছে, যেগুলো দেশে সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে, বিশ্বেও অবস্থান করে নিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি৷ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একাধিক ব্যক্তির তৈরি স্টার্টআপ বিশ্বে অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে৷ আবার বাংলাদেশে হেলথ কেয়ার টেকনোলজিতে ডক্টরোলা ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেতে শুরু করেছে৷

স্টার্টআপের জন্য অর্থায়ন কিংবা বিনিয়োগ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ বিশেষ করে বেসরকারি খাত স্টার্ট আপের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে চায় না বলে অভিযোগ রয়েছে, এ সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন?

দেখুন, সব কিছুই রেডি অবস্থায় থাকবে না৷ এটা তৈরি করে নিতে হয়৷ বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগকারী কারা হবে? আসলে যাদের ওই পরিমান অর্থ আছে৷ আর অন্য বিনিয়োগের চেয়ে স্টার্টআপে বিনিয়োগে বেশি লাভ মনে করার পরই তো তারা এখানে বিনিয়োগ করবেন৷ শেয়ার বাজার বা মেনুফ্যাকচারিংয়ে যদি বিনিয়োগে বেশি লাভ হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা তো সেদিকেই যাবেন৷ এখন আমাদের দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ হচ্ছে না সত্যি, এখানে সরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগ হচ্ছে৷ তবে আমি আশা করছি, শিগগিরই বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা এদিকে আসবেন৷

‘স্টার্টআপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি’

স্টার্টআপ কোম্পনির জন্য সরকারের যে অর্থায়ন বর্তমান পরিস্থিতিতে আছে, সেটা কি আপনার যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়?

 আমাদের সরকারের উদ্যোগ অবশ্যই যুক্তিযুক্ত৷ এই স্টার্টআপ কিন্তু নতুন আসেনি৷ এখন হয়ত এর নাম আমরা বেশি শুনছি৷ কিন্তু ১০ বছর আগেও সেটা ছিল৷ আসলে যে কোনো নতুন উদ্যোগই স্টার্টআপ৷ আসলে সরকারের বিনিয়োগটা অপকারের চেয়ে উপকারী বেশি৷

স্টার্টআপের মাপকাঠি নির্ণয়ে ‘ইনোভেশন' শব্দটি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে৷ আসলে ইনোভেশনের মানদণ্ড কি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারন করা সম্ভব?

আমার মনে হয় না ইনোভেশনের মানদণ্ড নির্ধারণ করা সম্ভব৷ আসলে এটা কত ছোট বা বড় সেটা বিষয় না৷ আসলে ইনোভেশন  ইনোভেশনই৷ এখানে ইনোভেশন আর ইনভেনশন এই দু'টো ওয়ার্ডের অর্থের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে ঝামেলাটা তৈরি হয়৷ এখানে ইনভেনশন হলো নতুন কিছু আবিস্কার করা৷ আর ইনোভেশন নতুন কিছু আবিস্কার না, পুরনো কোনো কিছু নতুন ডাইমেনশন দেয়া৷ এ কারণে এটা মাপকাঠিতে মাপা কষ্টসাধ্য৷

স্টার্টআপের জন্য ইনোভেশনের মানদণ্ড নির্ধারনে কেউ কেউ সরকারি কমিটি গঠনের কথাও বলেন, এটাও কি আসলে সম্ভব বা যৌক্তিক?

আমার মনে হয়, কোনো জাজ প্যানেল করে এর মানদণ্ড নির্ধারণ করা কষ্টসাধ্য৷ তবে কিছু কিছু প্রেক্ষিতে বিচারকমন্ডলী দিয়ে অ্যাসেসমেন্ট করা যেতে পারে৷ যে কোনো একটা ইনোভেশনের ফলে কতটুকু ইমপ্যাক্ট তৈরি হলো, সেটা সোসাইটিতে হোক বা অর্থনীতিতেই হোক, এর উপর একটা মানদণ্ড হতে পারে৷ এটা কতটা ভালো হয়েছে সেই মানদণ্ডটা নির্ধারণ করা ডিফিকাল্ট৷ একটা কমিটি গঠন করে যেটা করা যেতে পারে, একটা ইনোভেটিভ আইডিয়া ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, সেটা দেখা যেতে পারে৷

বিতর্ক আছে ‘ইনোভেশন'  কি কাজের বুয়া খোঁজার অ্যাপকে বলা হবে, নাকি কৃষি ক্ষেত্রে নতুন জাতের ধান উদ্ভাবনকে বলা হবে? এক্ষেত্রে অ্যাপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, না নতুন জাতের ধান উদ্ভাবনকারী কৃষক সফল স্টার্টআপ স্বীকৃতি পাবেন? কার সরকারি অর্থায়নে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত?

ডিজিটাল সচেতনতা যখন হাতিয়ার

ইনোভেশনে আসলে অগ্রাধিকার ঠিক করা মুশকিল৷ ইনোভেশন সব সময় আসে আসলে কোনো একটা সমস্যা সমাধানের মধ্য থেকে৷ আসলে সমস্যা তো সমস্যাই৷ সেটা ছোট হোক আর বড় হোক, শহরে হোক বা গ্রামে হোক৷ সেটা খাদ্য সংক্রান্ত হোক বা শিক্ষা সংক্রান্তই হোক৷ বা কোনো ইউটিলিটি সার্ভিস নিয়েই হোক৷ যেমন বুয়া বা ড্রাইভার খুঁজে পাওয়ার বিষয়ই হোক৷ সব সমস্যারই সমাধান প্রয়োজন৷ এখন অগ্রাধিকারের জায়গা থেকে যদি আমরা বলি, তাহলে কৃষককে আগে রাখব৷ কারণ, তাঁর আবিস্কার খাদ্য সমস্যা সমাধানে ভুমিকা রাখবে৷ তবে কাজের বুয়া খোঁজার অ্যাপকেও কিন্তু ছোট করা যাবে না৷

বাংলাদেশে স্মার্টফোনের জন্য সস্তা ব্যবসায়িক অ্যাপ তৈরিকেই স্টার্টআপ হিসেবে স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে, এমন অভিযোগও করছেন অনেকে৷ এর ফলে বড় উদ্যোক্তা কিংবা উৎপাদক তৈরির সম্ভাবনাকে কি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে?

অ্যাপ তৈরিই যে ইনোভেটিভ হবে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন৷ একটার পর একটা অ্যাপ তৈরিই যে ইনোভেটিভ কাজ হবে, সেটা কিন্তু বলা যাবে না৷ এখন যারা আসলে ইনোভেটিভ কাজ করছে, তাদের জন্য কিন্তু খানিকটা সমস্যা৷ কারণ, যে ভালো কিছু করছে তার কিন্তু প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে অপক্ষাকৃত অনেক খারাপ একটি অ্যাপের সঙ্গে৷ এতে ভিড় বেড়ে যাচ্ছে, যোগ্য ব্যক্তির মূল্যায়ন পেতেও কষ্ট হচ্ছে৷ এটার একেবারে জেনারেলাইজেশন করা উচিত না৷

স্টার্টআপে বাংলাদেশের সম্ভবনা আসলে কতটুকু?

অবশ্যই বড় সম্ভাবনার জায়গা রয়েছে৷ এর দুটো কারণ, এক, বাংলাদেশিরা জায়গায় জায়গায় প্রমাণ করেছে, তারা মেধার দিক দিয়ে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে না৷ আর দুই হলো, যেখানে সমস্যা বেশি, সেখানে সম্ভাবনাও বেশি৷ কারণ, এই সমস্যাগুলোর সমাধান বের করাই তো ইনোভেশন৷ ফলে এখানে সম্ভবনার জায়গাটা অনেক৷

ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সমীর কুমার দে৷
সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য