1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হলফনামার তথ্য দিয়ে কার কী?

২ জানুয়ারি ২০২০

নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে হলফনামার মাধ্যমে কমিশনকে সম্পদের বিবরণসহ আট ধরনের তথ্য দিতে হয়৷ কিন্তু এই তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন কী করে? ভুল বা অসত্য তথ্য দিলে কি কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়?

https://p.dw.com/p/3VbXy
Atiqul Islam
ফাইল ফটোছবি: Bangla Tribune/Nasirul Islam

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘‘নির্বাচন কমিশন নিজে কোনো তথ্য যাচাই-বাছাই করে না৷ তবে কেউ কোনো অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখে৷'' আর দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘‘আমরা পর্যবেক্ষণ করি৷ প্রয়োজন হলে তদন্ত করি৷''

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া তথ্য নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে৷ হলফনামায় তারা সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছেন তা এরইমধ্যে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে৷ তাতে দেখা যায় ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের মোট সম্পদের পরিমাণ ১২২ কোটি টাকা৷ পেশায় এই আইনজীবী তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১০ কোটি টাকা৷ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ তখনকার হলফনামায় দেয়া তার সম্পদের পরিমান ছিলো ১০৪ কোটি টাকা৷ এক বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১৮ কোটি টাকা৷

তাপস ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই এলাকা থেকে নির্বাচিত হন৷ তখন তার নগদ অর্থ ছিলো ৬ কোটি ২ লাখ টাকা৷ এখন তার হাতে নগদ আছে ২৬ কোটি তিন লাখ টাকা৷

রফিকুল ইসলাম

দক্ষিণে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন৷ তার সম্পদ আছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার৷ বার্ষিক আয় ৯১ লাখ টাকা৷ তিনি পেশায় একজন প্রকৌশলী৷ তার হাতে নগদ আছে ৩৩ হাজার টাকা৷

ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সম্পদের পরিমান ১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা৷ গত বছর উপ-নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় তার সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা৷ এই সময়ের মধ্যে তার সম্পদ তেমন না বাড়লেও তার স্ত্রীর বেড়েছে৷

এই সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল৷ তিনি ২০১৫ সালেও বিএনপির প্রার্থী ছিলেন৷ বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা৷ ২০১৫ সালে ছিলো ৩১ কোটি ৬ লাখ টাকা৷ তার এখন বার্ষিক আয় ৪ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা ২০১৫ সালে ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা৷

মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থী সবাই আইন অনুযায়ী হলফনামা দাখিল করেছেন নির্বাচন কমিশনে৷ এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম  বলেন, ‘‘আমরা এই হলফনামার তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি৷ এর উদ্দেশ্য হলো এলাকার ভোটাররা যেন প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে পারেন৷ তারা যেন ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে এসব তথ্য কাজে লাগাতে পারেন৷ যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে পারেন৷''

তবে নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে এসব তথ্য যাচাই বা অনুসন্ধান করে দেখে না৷ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘তারা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আদালতের সামনে এসব তথ্য ঘোষণা করেন৷ আমরা তাদের দেয়া তথ্য সত্য বলে ধরে নেই৷ তবে কেউ কোনো অভিযোগ করলে আর সেটা যদি নির্বাচন সংক্রান্ত হয় তাহলে আমরা সেটা দেখি৷ নির্বাচনের পরেও ইলেকশন ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ করা যায়৷''

ইকবাল মাহমুদ

তবে দুর্নীতি, সম্পদের বিবরণীতে অসত্য তথ্য দিলে সেটা সরকারের অন্যকোনো দায়িত্বশীল সংস্থাও যেকোনো সময় দেখতে পারে বলে জানান তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ করে সম্পদ, আয়, এর উৎস এগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন দেখতে পারে৷''

দুর্নীতি দমন কমিশন প্রার্থীদের এইসব হলফনামার তথ্য পর্যবেক্ষণে রাখছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ৷ তিনি বলেন, ‘‘হলফনামা  ধরে কেউ যদি কোনো অভিযোগ করেন তাহলে আমরা তা দেখতে পারি৷ আবার কারো সম্পদ বিবরণীতে যদি কোনো অস্বাভাবিক কিছু আমাদের চোখে পড়ে তাহলেও আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি৷ এটা দেখার এখতিয়ার আমাদের আছে৷'' তিনি জানান, ‘‘আগের মতো এবারও আমরা সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া তথ্য পর্যবেক্ষণে রেখেছি৷''

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান মনে করেন যে উদ্দেশ্যে প্রার্থীদের হলফনামার বিধান চালু হয়েছে সেটা অর্জন হচ্ছে না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরাই এই হলফনামার জন্য নানাভাবে দাবি তোলার পর বিধানটি করে নির্বাচন কমিশন৷ তাদের কাজ হলো এটা যাচাই-বাছাই করে কেউ যদি অসত্য তথ্য দেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া৷ সাধারণ মানুষ ভয়ে অনেক সময় জানলেও তা প্রকাশ করে না৷ নির্বাচন কমিশন যদি নিজে উদ্যোগী হয়ে এটা না করে তাহলে এই হলফনামার মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘হলফ করে কোনো অসত্য তথ্য দেয়া অপরাধ৷ এটা বিচেনায় নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই হলফনামা খতিয়ে দেখতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য