1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হারিয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ বীজ

২৪ আগস্ট ২০২২

বিশ্বজুড়ে নানা পরিস্থিতির সঙ্গে সহনশীল এমন অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ উৎপাদন করে পৃথিবীর মাটি৷ জাতিসংঘ বলছে, ২০ শতকে প্রায় ৭৫ভাগ শস্য প্রজাতি হারিয়ে গেছে৷ এর কারণ কী?

https://p.dw.com/p/4FwuV
Chiasamen
ছবি: Olga Sergeeva/Zoonar/picture alliance

বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত চার লাখ প্রজাতির উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছে৷ এর ১০ ভাগেরও কম খাবার উপযোগী৷ 

ভূট্টা, চাল ও গম পৃথিবীর অর্ধেরও বেশি খাদ্যের যোগান দেয়৷ যখন থেকে মানুষ স্থির জীবন বেছে নিয়েছে, তখন থেকে এসব শস্যের বীজ সংগ্রহ শুরু করেছে৷ ১০ হাজার বছরেরও আগে প্রথম মেসোপটোমিয়া অঞ্চল বা এখনকার ইরাক ও তুরস্কে প্রথম শস্য চাষ করা হয়৷ তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ প্রজাতির শুধু গমই চাষ হয়েছে৷

নানা শস্যের যোগান এবং একটি শস্যের একাধিক জেনেটিক ভিন্নতা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জরুরি৷ যত বেশি ভিন্ন প্রজাতির গম বা অন্য শস্য চাষ হবে, তত বেশি কোন রোগের কারণে এই শস্য পৃথিবী থেকে মুছে যাবার ঝুঁকি কম হবে৷

আর তাই বীজ ব্যাংক এত গুরুত্বপূর্ণ৷ সবচেয়ে পুরোনো বীজব্যাংক আছে সেন্ট পেটার্সবুর্গে, এটি স্থাপিত হয় ১৮৯৪ সালে৷ আজ জার্মানির গাটার্সলেবেনের বীজব্যাংকটি পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় বীজব্যাংকগুলোর একটি৷

শস্য রক্ষায় বীজ নিয়ে ভাবনা

ব্যাংকগুলো বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানান বীজ ও শস্য সংগ্রহ করে৷ এর অনেকগুলো নরওয়ের স্পিটসব্যার্গেন দ্বীপে বৈশ্বিক বীজ ভল্টে সংরক্ষণ করা হয়৷

তবে মাঠপর্যায়ের ছবিটি উলটো৷ জাতিসংঘ বলছে, ২০ শতকে প্রায় ৭৫ভাগ শস্য প্রজাতি হারিয়ে গেছে৷ এর কারণ অনেক৷

শিল্পপর্যায়ে কৃষি উৎপাদনের কারণে শস্যগুলোকে নানান শর্তপূরণ করতে হচ্ছে৷ তাদের উচ্চফলনশীল হতে হবে, সব একইসময়ে পাকতে হবে এবং বড় বড় যন্ত্র নিয়ে ফসল তোলার সময় যেন কোন ক্ষতি না হয় তেমনভাবে বেড়ে উঠতে হবে৷

আধুনিক বৈশ্বিক ট্রেড নেটওয়ার্কের অর্থ হল দূরপাল্লায় ফল ও সবজি পরিবহণের সময় তা তাজা থাকতে হবে৷ খুব কম প্রজাতিই এসব চাহিদা পূরণ করতে পারে৷ সুপারমার্কেটগুলোতে যা পাওয়া যায় বলে বলা হয়, তার সব সত্য নয়৷ যেমন নানা রকমের টমেটো বা শসা দেখতে ভিন্ন হলেও আসলে জিনগতভাবে তারা প্রায় একই৷

এই জিনগত দৈনতা ঝুঁকিমুক্ত নয়৷ ৭০ এর দশকে একটি ভাইরাস এশিয়াজুড়ে একমেয়াদে সব চালের উৎপাদন নষ্ট করে দেয়৷ এরপর একটি বুনো চালের সঙ্গে এর ক্রস প্রজনন করা হলে সেই ভাইরাসের হাত থেকে চাল রক্ষা পায়৷

হাজারো বছর ধরে চাষীরা বীজ সংগ্রহ করেছেন এবং নিজেদের মধ্যে আদানপ্রদান করেছেন, যাতে উন্নত ও বৈচিত্র্যময় ফলন পাওয়া যায়৷

কিন্তু গেল কয়েক দশকে হাতে গোণা কয়েকটি বীজ কোম্পানি কয়েক ধরনের বীজই সরবরাহ করছে৷ যেমন, ৯৫ ভাগ বাধাকপির ধরন হারিয়ে গেছে৷

এসব কোম্পানি নিজেদের শস্য ডিজাইন করে এবং তার স্বত্ব সংরক্ষণ করে৷ আন্তর্জাতিক বাজারের দুই তৃতীয়াংশ বীজ তাদের দখলে৷ চাষীরা অনেকসময় বীজ সংগ্রহ করতে না পেরে এমনকি নির্দিষ্ট সার ও কীটনাশক কিনতেও বাধ্য হয়৷

তবে বিশ্বজুড়ে এখন শস্য বৈচিত্র্য বাড়ানো এবং স্বত্ব ছাড়া বীজ বিতরণ করার ঝোঁক কিছুটা বেড়েছে৷ যেমন আর্চে নোয়াহ নামের একটি এনজিও পুরোনো বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়া বীজ সংগ্রহ করছে৷

তারা এই বীজের প্রচার করে এবং সেসব চেইন সুপারমার্কেটের কাছে সরবরাহ করে, যারা বীজ ও তা থেকে উৎপাদিত শস্য বিক্রি করে৷

কর্নেলিয়া বোরমান/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য