1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হয়ে গেল জার্মানির ‘রাজকীয় বিয়ে’

২৮ আগস্ট ২০১১

মাত্র ক’মাস হলো ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম আর কেট’এর বিয়ে নিয়ে সারা বিশ্বে হৈচৈ পড়ে গিয়েছিল৷ জার্মানিতেও শনিবার হয়ে গেল সেরকম একটি রাজকীয় বিয়ে৷

https://p.dw.com/p/12Ogp
প্রিন্স গেয়র্গ ফ্রিডরিশ ও প্রিন্সেস জোফিছবি: picture alliance/dpa

প্রায় একশো বছর হতে চললো জার্মানিতে রাজ পরিবার বলে কিছু নেই৷ শেষ যে রাজা ছিলেন তাঁর নাম দ্বিতীয় ভিলহেল্ম৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর তিনি হল্যান্ডে নির্বাসনে চলে যান৷ মৃত্যু পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন এবং তাঁকে সেখানেই সমাহিত করা হয়৷

ভিলহেল্ম ছিলেন প্রুসিয়ার রাজা৷ আর সেই প্রুসিয়ার বর্তমান প্রিন্স হচ্ছেন গেয়র্গ ফ্রিডরিশ ৷ ৩৫ বছর বয়সি সুদর্শন এই তরুণ বিয়ে করেন বাল্যবন্ধু জোফিকে, যিনি আবার ইজেনবুর্গের প্রিন্সেস৷

ফ্রিডরিশ আর জোফি দুজনই ব্যবসা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়ালেখা শেষ করে এখন চাকরি করছেন৷ বার্লিনের পাশে অবস্থিত পতসডামের ‘জানুসি প্যালেস'এর গির্জায় এক অনুষ্ঠানে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে থাকার শপথ নেন৷ বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল আগেই, এই বৃহস্পতিবারে৷ জার্মানিতে গির্জার বিয়ে আইনগতভাবে স্বীকৃত নয় বলেই এই ব্যবস্থা৷

Flash-Galerie Hochzeit von Georg Friedrich Prinz von Preußen und Sophie Prinzessin von Isenburg
ছবি: picture alliance/dpa

আঠার শতকে প্রুসিয়ার রাজা ‘ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট'এর গ্রীষ্মকালীন বাসস্থান ছিল এই ‘জানুসি প্যালেস'৷ তাই বিয়ে করার জন্য এই জায়গা বেছে নেয়ার মাধ্যমে প্রিন্স ফ্রিডরিশ তাঁর রাজকীয় পরিবারের ঐতিহাসিক গুরুত্বকেই সামনে নিয়ে এলেন, বলে মনে করছেন অনেকে৷ এদিকে এবছরই ঐ রাজকীয় পরিবারের ৯৫০তম বর্ষ পালিত হচ্ছে৷

রাজত্ব না থাকলে কি হবে বিয়েটা কিন্তু রাজকীয় ঢংয়েই হয়েছে৷ সাধারণ মানুষেরও এই বিয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল৷ তাইতো অনেকেই এটাকে বলছেন জার্মানির ‘সোশ্যাল ইভেন্ট অব দ্য ইয়ার' অর্থাৎ বছরের সেরা সামাজিক অনুষ্ঠান৷ টেলিভিশনে সরাসরি দেখানো হয় বিয়ের অনুষ্ঠান৷ প্রায় একশো সাংবাদিক অনুষ্ঠানটি কাভার করেন৷

বিয়েতে যোগ দেন প্রায় সাতশো অতিথি৷ কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এটা রাজকীয় বিয়ে না হওয়ায় এতে ইউরোপের রাজ পরিবারগুলোর উল্লেখযোগ্য কেউ অংশ নেননি৷

৩৩ বছর বয়সি প্রিন্সেস জোফিকে একটি ধূসর রংয়ের রোলস রয়েস গাড়িতে করে বিয়ের স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ নীল আর সাদা রংয়ে সাজানো হয়েছিল গির্জাটি৷

ফ্রিডরিশ হচ্ছেন প্রোটেস্টান্ট আর জোফি ক্যাথলিক৷ তাই বিয়ের অনুষ্ঠান হয় দুই পর্বে৷ ক্যাথলিক পর্বটি পরিচালনা করেন গ্রেগর হেঙ্কেল, যিনি অস্কার বিজয়ী চিত্র পরিচালক ফ্লোরিয়ান হেঙ্কেলের চাচা৷

Flash-Galerie Adel in Deutschland Schloss Sanssouci in Potsdam
জানুসি প্যালেসছবি: picture alliance/dpa

বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন পতসডামের মেয়র ইয়ান ইয়াকোবস৷ তিনি বলেন, বিয়ের জন্য প্রিন্স ফ্রিডরিশ পতসদামকে বেছে নেয়ায় তিনি খুব খুশি৷

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম আর কেট'এর মতো প্রিন্স ফ্রিডরিশ আর জোফিও ছাদখোলা গাড়িতে করে জানুসি প্যালেসের পার্ক পেরিয়ে ‘নিউ চেম্বারস'এ পৌঁছান৷ যেখানে পরে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানটি হয়৷ সেখানে ৩৭০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷

বিয়ের অনুষ্ঠান অবশ্য শুরু হয়েছিল শুক্রবার রাতেই৷ সেসময় আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বার্লিনে একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল৷

জার্মানি ও স্কটল্যান্ডে পড়াশোনা করা প্রিন্স ফ্রিডরিশ এখন একটি কোম্পানিতে কাজ করছেন যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের আবিস্কারগুলোর বাণিজ্যিক ব্যবহারে সহায়তা করে৷ আর প্রিন্সেস জোফি কাজ করছেন একটি কনসাল্টিং কোম্পানিতে৷ বিভিন্ন ফাউন্ডেশনকে তাঁরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়