1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০৫০ সালে সাগরের অবস্থা

১৩ জুলাই ২০১৬

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগরের জলে কিছু কিছু জীবাণু ও উদ্ভিদ মনের সুখে বংশবৃদ্ধি করছে, অন্যরা কোণঠাসা হচ্ছে৷ পানির অম্লত্ব বাড়ছে, পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমছে৷ বিজ্ঞানীরা ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/1JNlr
ছবি: STR/AFP/Getty Images

জার্মান বিজ্ঞানীরা উত্তর সাগরে পরীক্ষা করে দেখছেন, সাগরের পানির নীচে জলবায়ু পরিবর্তনের কী ধরনের প্রভাব পড়ছে; বিশেষ করে কার্বন ডাইঅক্সাইডের নির্গমন বাড়ার ফলে সমুদ্রের প্রাণিজগতের সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা৷ জলের নীচে এক্সপেরিমেন্টের জন্য প্লাস্টিকের চৌবাচ্চা নামানো হচ্ছে৷ এগুলো যেন সুবিশাল টেস্টটিউব বা রিএজেন্ট গ্লাস৷ জলের মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রবেশ করালে প্রাণী আর উদ্ভিদদের কী প্রতিক্রিয়া হয়, তা দেখতে চান বিজ্ঞানীরা৷ কেননা কার্বন ডাই-অক্সাইড যুক্ত হলে সাগরের জল অ্যাসিডিক হয়ে যায়৷ বাড়ির কাছেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন কিল-এর হেল্মহলৎস সেন্টার ফর ওশেন রিসার্চের বিজ্ঞানীরা৷

ঝিনুক, অ্যালজি অর্থাৎ সমুদ্রশৈবাল আর ব্যাকটেরিয়া মানে জীবাণুরা মিলেমিশে থাকে৷ পরিবেশের কোনো একটি উপাদান বদলালেই চেন রিয়্যাকশন শুরু হয়ে যায়৷ মেরিন বায়োলজিস্ট মার্টিন ভাল জানালেন, ‘‘এই নতুন সরঞ্জাম দিয়ে আমরা এই প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের অনুরূপ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারছি৷ আমরা তার সব ক'টি তাৎপর্যপূর্ণ উপাদান বদলাতে পারি ও তার স্বাভাবিক ওঠানামা অনুকরণ করতে পারি৷'' বিজ্ঞানীরা দেখতে চান, ২০৫০ সালে বালটিক সাগরের অবস্থা কী দাঁড়াবে৷ সেজন্য কখনো জলের তাপমাত্রা বাড়ানো হয়, কখনো তার অম্লত্ব৷

গলছে বরফ, আসছে বিপর্যয়

বিপদটা যেখানে

সাগরের প্রাণীরা মরতে শুরু করলে বিশ্বে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে৷ ভাগ্যক্রমে সাগরের নিজেকে নিরাময় করার ক্ষমতা অসীম৷ জিওমার-এর মেরিন বায়োলজিস্ট মার্টিন ভাল বলেন, ‘‘সাগর যাতে একটা অক্সিজেনশূন্য, দুর্গন্ধ নোংরা জলের ডোবা না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করে বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের এই স্বনির্ভর, স্থিতিশীল সহাবস্থান৷ আশা করি এই ভারসাম্য আরো অনেকদিন টিকবে৷''

সাগরের নীচের উদ্ভিদরা যে অম্লত্বের ফলে কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার প্রমাণ এই সি উইড৷ পানির অ্যালকালাইন ভ্যালু যত কম হবে, ততই অ্যান্টিবডির উৎপাদন কমবে৷ বালটিক আইসোপড-রা সি উইড খেতে খুব ভালোবাসে৷ সাগরের নীচের জীবজগত খুবই জটিল, যা বিজ্ঞানীদের মুগ্ধ করে৷ মার্টিন ভাল বলেন, ‘‘সাগরে ২০ ধরনের বেশি ফাইলা বা বর্গের জীব আছে, যা শুধু সাগরেই পাওয়া যায়৷ প্রত্যেক ফাইলাম বা বর্গকে বিবর্তনের একটা নতুন আবিষ্কার বলা চলে৷ শুধু এই কারণেই জলের নীচে যে জীববৈচিত্র্য আছে, তা ডাঙায় পাওয়া সম্ভব নয়৷''

জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ

সাগরের পরিবেশ প্রণালী পরিবর্তনের সঙ্গে কিছুদূর খাপ খাইয়ে নিতে পারে – তবুও মানুষ সাগরের প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের উপর প্রভাব ফেলছে৷ মাইক্রোঅরগ্যানিজম-এও পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়৷ বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন, কোন কোন অরগ্যানিজম – প্রাণী বা উদ্ভিদ – কী ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে বংশবৃদ্ধি করে৷

পানি যত গরম হবে, তার মধ্যে তত বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকবে৷ অপরাপর দরকারি প্রাণিসত্তা হয়ত কোণঠাসা হবে৷ গবেষকরা এক ধরনের শীঘ্র সতর্কতা প্রণালী বার করার চেষ্টা করছেন; তাঁরা এমন সব ইন্ডিকেটর বা সূচকের খোঁজ করছেন, যেগুলো থেকে বোঝা যাবে, কোন পর্যায় থেকে প্রজাতির বিলোপ রোখা আর সম্ভব নয়৷

মার্টিন ভাল বলেন, ‘‘আমরা যদি এভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়তে থাকি, তাহলে অম্লতা বাড়তে থাকবে৷ ফলে উষ্ণায়ন ও অন্যান্য সমস্যাও বেড়ে চলবে৷ আমরা শুধু আশা করতে পারি যে, এ সব ধীরে ধীরে ঘটবে, যা থেকে প্রাণী আর উদ্ভিদরা খাপ খাইয়ে নেওয়ার সময় পাবে৷''

বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সমুদ্রাঞ্চলের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, তা বোঝার চেষ্টা করছেন৷ সেই বোঝাটাই হয়ত সমুদ্রের পরিবেশকে বাঁচানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ হতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান