অগ্নুৎপাতের আগাম তথ্য
২৬ জুলাই ২০১৪আমাদের বিশ্বের অন্যতম বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত৷ এর ফলে টন-কে টন ছাই এবং লাভা ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে৷ দূর থেকে অগ্ন্যুৎপাত দেখতে অনেকের ভালোই লাগে৷ কিন্তু যারা সেটির কাছে থাকেন, তাদের জন্য এটা ক্ষয়ক্ষতি, ধ্বংস এবং ভাঙনের প্রতীক৷
অগ্ন্যুৎপাত ঘটার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছেন জার্মানির পটসডামে অবস্থিত জিওসায়েন্সেস গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা৷ ভূপদার্থবিদ বিয়র্গার গটফ্রিড ল্যুয়র পৃথিবীর ১৫০০ সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং কম্পন সম্পর্কিত কার্যকলাপ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘একটি আগ্নেয়গিরি সাধারণত কয়েকশত বছর ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে৷ এরপর হঠাৎ করে সক্রিয় হয়৷ তবে এই সক্রিয় হওয়ার কিছু পূর্ব লক্ষণ রয়েছে৷ উদাহরণস্বরূপ মাউন্ট সেন্ট হেলেনস বা পিনাটুবোর কথা বলা যেতে পারে৷ অগ্ন্যুৎপাত সম্পর্কে কিছু ক্ষেত্রে আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব৷ তবে কাজটি বেশ কঠিন৷''
দু'রকম অগ্নুৎপাত
অগ্ন্যুৎপাতের ধরন মূলত দু'রকম৷ একক্ষেত্রে গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে এবং ম্যাগমা ও পাথর বেরিয়ে আসে৷ অন্যথায় গ্যাস সৃষ্ট কোনো বিস্ফোরণ ছাড়াই লাভা বেরিয়ে আসে৷ তবে প্রতিটি অগ্ন্যুৎপাত থেকে বেরিয়ে আসা ম্যাগমা, লাভা এবং ছাইয়ের কিছু আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে৷ এ সব অবশ্য ভূগর্ভে থাকা বিভিন্ন পদার্থ সম্পর্কে গবেষণায় গবেষকদের সহায়তা করে৷
পটসডামের গবেষণাগারে লাভার মধ্যে থাকা বিভিন্ন বস্তু আলাদা করেন গবেষকরা৷ অগ্ন্যুৎপাতের সময়কার গতি এবং তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় বিভিন্ন পার্টিকেলের আকার এবং আয়তন দেখে৷ এ সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আগ্নেয়গিরিটা আবারো কবে অগ্ন্যুৎপাত ঘটাবে তা ধারণা করা যায়৷
জিএফজেড পটসডামের গবেষক রাল্ফ নাউমান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘এটা অপরাধতত্ত্বের মত নয় যে অনেক সময় একশো ভাগ সঠিক ফলাফল জানা সম্ভব৷ অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাব্যতা বিবেচনার জন্য শুধু একটি নমুনা নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হয়৷ অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে নেয়া লাভার নমুনার পাশাপাশি ভূগর্ভ থেকে পাওয়া নমুনাও পরীক্ষা করা হয়৷''
মূল চালিকা শক্তি
এখনো কিছু ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকলেও অগ্ন্যুৎপাতের ক্ষমতা সম্পর্কে গবেষণার ক্ষেত্রে গবেষকরা বেশ এগিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘অগ্ন্যুৎপাতের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে তরল পদার্থ এবং পানি৷ আর এই তরল এবং পানিই অগ্ন্যুৎপাতকে বিস্ফোরণে পরিণত করে৷''
তবে অগ্ন্যুৎপাতের সব রহস্য কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি৷ বিশেষ করে বিজ্ঞানীরা ঠিক কবে নাগাদ অগ্ন্যুৎপাত সম্পর্কে একেবারে সঠিক তথ্য জানাতে পারবেন এবং আগেভাগেই সে সবের ক্ষতির মাত্রা নিরূপণে সক্ষম হবেন, সেটা কেউ জানে না৷