আইসল্যান্ডে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বিমান সংস্থাগুলির মাথায় হাত
২৪ মে ২০১১বছরে একবার করে যদি আগ্নেয়গিরির তাণ্ডবের কারণে বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে ইউরোপের অর্থনীতির উপর বাড়তি চাপ পড়তে বাধ্য৷ এবার আর এইয়াফিয়াদলা বা এইয়াফিয়াদলাইয়োক্যুডল নয়, এবার অগ্ন্যুৎপাতের জন্য দায়ী গ্রিমসভ্যোটন৷ কিন্তু সমস্যাটা শুধু নাম বা তার উচ্চারণ হলে কারো কিছু বলার থাকতো না৷ কিন্তু ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়ে গোটা মহাদেশের আকাশে তার ধোঁয়া ও বিমানের ইঞ্জিনের জন্য বিপজ্জনক পদার্থ ছড়িয়ে দেওয়ার ফলেই বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে৷ তার উপর আকাশপথে কোথায়, কখন, কতটা বিপদের আশঙ্কা রয়েছে, তা বোঝা অত্যন্ত কঠিন৷ কিন্তু সব জেনেশুনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিমান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়াও চলে না৷ ফলে প্রকৃতির বিশাল শক্তির সামনে মানুষ আজও কতটা অসহায়, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে৷
নিরপাত্তার মানদণ্ড নিয়ে বিতর্ক
গত বছর আইসল্যান্ডে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বেসামরিক বিমান চলাচলের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকে বিশাল লোকসানের মুখ দেখতে বাধ্য হয়েছিল৷ ৬ দিনের অচলাবস্থার ফলে প্রায় ১ কোটি বিমানযাত্রী আটকে পড়েছিলেন৷ কোন অবস্থায় আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া উচিত, সেই অভিজ্ঞতার পর এই মর্মে নির্দিষ্ট এক নীতিমালাও তৈরি হয়েছিল৷ বিপদের আশঙ্কার মাত্রা অনুযায়ী আকাশে তিন ধরণের ‘জোন' বা এলাকা চিহ্নিত করার পদ্ধতি তৈরি হয়েছিল৷ কিন্তু এবছরই যে সেই নীতিমালা প্রয়োগ করতে হবে, এমনটা কেউ ভাবে নি৷ ফলে এখন এই প্রশ্নে বড় বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে৷
জার্মানির মতো দেশ কোনো রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয়, অন্যদিকে বাকিরা এত কড়া নিয়ম মানতে চাইছে না৷ জার্মান পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রশ্ন তুলেছে, আকাশে প্রতি বর্গ মিটার এলাকায় ২ মিলিগ্রাম বিপজ্জনক পদার্থ থাকলে যে নিরাপদে বিমান চালানো সম্ভব, তার প্রমাণ কী? জার্মানি গত বছরের সংকটের পর বিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারীদের বিশেষ পরীক্ষা চালানোর পরামর্শ দিয়েছিল৷ আয়ারল্যান্ডের ‘রায়ান এয়ার' অবশ্য এত সাবধানতার কোনো কারণ দেখছে না৷ তারা মঙ্গলবার স্কটল্যান্ডের আকাশে ‘রোড জোন'এ বিমান চালিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, যে এতে কোনো বিপদের আশঙ্কাই নেই৷
আগ্নেয়গিরির সর্বশেষ অবস্থা
আপাতত গ্রিমসভ্যোটন'এর কালো মেঘ স্কটল্যান্ডের দিকে এগোচ্ছে, জার্মানি তথা ইউরোপের আকাশ এখনো নিরাপদ রয়েছে৷ গ্রিমসভ্যোটন মঙ্গলবার গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশ শান্ত রয়েছে৷ কিন্তু ধোঁয়া বেরোনো বন্ধ হয় নি, যদিও তার উচ্চতা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে৷ ফলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ছে৷ বায়ুমণ্ডলের উচ্চ স্তরে ক্ষতিকারক পদার্থ পৌঁছানোর আশঙ্কা কমে এসেছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক