1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘এখনও টিকার প্রক্রিয়ায় ‘স্কয়ার’ যুক্ত হয়নি’

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩০ এপ্রিল ২০২১

ভারতের সেরাম ফাউন্ডেশন থেকে টিকা আসার প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার পর টিকা নিয়েই দেশজুড়ে চলছে আলোচনা৷ এ বিষয়ে কথা বললেন স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালসের পরিচালক আহমেদ কামরুল আলম৷

https://p.dw.com/p/3soam
Bangladesch Sylhet | Corona | Start der landesweiten Impfkampagne
ছবি: Md Rafayat Haque Khan/Zuma/picture alliance

ডয়চে ভেলে: টিকা নিয়ে কী  স্কয়ার কোনো কাজ করেছে?

আহমেদ কামরুল আলম : আমাদের টিকার ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট এই মুহূর্তে নেই৷ কিন্তু ভবিষ্যতে এই টিকার প্রয়োজনীয়তা থেকে যাবে বলে আমরা মনে করছি, সে কারণে প্রাথমিক প্রস্তুতির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে৷ এই মুহুর্তে স্কয়ার হাউজে করোনার ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা কম৷

টিকা নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনাগুলো কেমন?

সামনে যে টিকাগুলো আসছে, সেদিকে আমাদের নজর আছে, আমরা খোঁজ-খবর রাখছি৷ এই টিকাগুলোর মধ্যে কোনটা আমাদের জন্য সঠিক হবে বা সেগুলোর ম্যানুফ্যাকচারিং কমপ্লায়েন্স কতটুকু, সেটা নিশ্চিত করে আমরা মুভ করতে পারি, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের বৈজ্ঞানিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে৷ আমাদের রিসার্চার যারা আছেন, তারা এগুলো নিয়ে গবেষণা করছেন৷

টিকা নিয়ে সরকার বা বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার কোনো উদ্যোগ কি আপনারা নিয়েছেন?

একদম স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে আমাদের কোনো প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে সেটা আমি বলবো না৷ কিন্তু বিভিন্ন স্টাডি পর্যায়ে আমাদের আলোচনা শুরু হয়েছে৷ টিকার কার্যকারিতা বা আমাদের সক্ষমতা নিয়েও নিজস্ব আলোচনা চলছে৷

টিকা নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আমরা শুধু করোনার ভ্যাকসিনের বিষয়টিই মাথায় রাখছি না, অন্যান্য ডিজিজের বিষয়েও আমাদের কাজ চলছে৷ সামগ্রিকভাবেই আমরা ভাবছি যে, দেশের জনগণের জন্য অন্যান্য ডিজিজকে সামনে রেখে কিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, সেগুলো নিয়ে আমাদের নিজস্ব চিন্তা -ভাবনা এখনো আছে৷ কিন্তু সেগুলো এখনো প্রকাশ করার মতো বড় আকারে কিছু হয়েছে, সেটা আমরা বলছি না৷

এখন তো টিকা আনার নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এর কোনো প্রক্রিয়ার সঙ্গে কি স্কয়ার যুক্ত হয়েছে?

আমরা এখনো পরিষ্কারভাবে কারো সঙ্গে যুক্ত হইনি৷ কিন্তু যে বলছিলাম, আমাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে৷

রাশিয়া তো বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনে আগ্রহী৷ স্কয়ারের কি এই ধরনের কোনো আগ্রহ আছে বা সক্ষমতা আছে?

আমাদের সরাসরি ভ্যাকসিন ম্যানুফ্যাকচারিং সক্ষমতা নেই৷ কিন্তু আমরা যদি পরিকল্পনা স্থির করি, তাহলে সেটা করতে পারবো৷ সেক্ষেত্রে আমরা সক্ষমতা অর্জন করবো৷ এই মুহূর্তে যেহেতু আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট নেই, তাই আমাদের বিষয়গুলো আলোচনার পর্যায়েই আছে৷

বাংলাদেশে কি টিকা উৎপাদনে কোনো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা আছে?

 হ্যাঁ, সক্ষমতা আছে৷ এর মধ্যে একটি সরকারি এবং দু'টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের৷

স্কয়ারের সামনে এমন সুযোগ এলে সেটা কাজে লাগাতে আগ্রহী?

অবশ্যই৷ আমরা হেলথ কেয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে আছি৷ জনগণের উপকারের জন্য যে কোনো ধরনের উদ্যোগ, অর্থাৎ, সেটা টিকা হতে পারে, ওষুধ হতে পারে, আমরা অবশ্যই সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবো৷

আহমেদ কামরুর আলম

এখন তো টিকার বাজার উন্মুক্ত৷ আপনারা কি আমদানির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন?

সরকারের অনুমতি একটা ভালো দিক৷ কিন্তু উৎপাদন সক্ষমতা একটা বড় ব্যাপার৷ আমারা যেহেতু উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করিনি, তাই নিজেরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি যে, আমরা কীভাবে এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারি৷ আমদানির ব্যাপারে আমাদের ইচ্ছা আছে৷ কিন্তু আমাদের আরো স্টোরেজ সুবিধা, মূল্য, সরকারি যোগাযোগসহ অনেক কিছু ভেবে এগিয়ে যেতে হবে৷

করোনার নুতন ভেরিয়েন্টের জন্য পৃথক টিকার কী প্রয়োজন? আপনাদের গবেষণা কী বলছে?

বিশ্বের বাজারে যেগুলো আছে, সেগুলোই এখন পর্যন্ত কার্যকর৷ বাংলাদেশের জনগণের উপর এই টিকাগুলোই কার্যকরী বলে আমরা রিসার্চ পেপার থেকে জেনেছি৷ সুতারং, এই মুহূর্তে নতুন কোনো আবিস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি না৷ ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত টিকাগুলোর প্রতিটিই কার্যকর বলে আমরা জেনেছি৷

বলা হচ্ছে, কেউ অক্সফোর্ডে একডোজ টিকা নিলে অন্য কোম্পানির আরেক ডোজ নিতে পারবেন না৷ আপনাদের বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?

বিভিন্ন জার্নালে যে তথ্যগুলো এসেছে, সেগুলোর উপর নির্ভর করে মন্তব্য করতে হচ্ছে৷ আমরা যেটা জেনেছি, প্রথম ডোজের টিকা যে কোম্পানি থেকে দেওয়া হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজও সেই কোম্পানির দেওয়া সর্বদিক থেকে নিরাপদ ও কার্যকরী৷

রাশিয়ার যে টিকা আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটার ব্যবস্থাপনা কি অক্সফোর্ডের টিকার মতোই, নাকি আলাদা ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন?

আলাদা কোনো ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন নেই বলেই আমি জানি৷ এটার ব্যবস্থাপনা অক্সফোর্ডের মতোই৷

টিকা নিয়ে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থা কী?

আমরা নিজেরা আলোচনা করছি, যথোপযুক্ত সময়ে আমরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবো৷

রেমডিসিভিরসহ করোনার যে ওষুধ, সে ব্যাপারে স্কয়ারের কাজ কতখানি?

প্রথম দিন থেকেই ওষুধের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রাসীভাবেই কাজ করেছি আমরা৷ আমরা বিজ্ঞানীদের যুক্ত করে সর্বোচ্চ কম সময় যাতে লাগে, সেটা নিশ্চিত করে ইতিমধ্যে বাজারজাত করেছি৷ রেমডিসিভির তার মধ্যে অন্যতম৷ এছাড়াও সেভিপ্রাজিল, হাইড্রোকোরোকুইনসহ যতগুলো ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে অনুমতি পেয়েছে বিশ্বে প্রতিটি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল বাজারজাত করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে৷ রেমডিসিভির থেকে শুরু করে করোনা চিকিৎসাকে সাহায্য করে এমন ওষুধ আমরা বাজারজাত করছি৷

স্কয়ার যে ওষুধগুলো বাজারজাত করেছে, সেগুলো দেশি বাজারের জন্য, নাকি আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য?

সবার আগে দেশের মানুষের স্বার্থ লক্ষ্য রাখতে হয়৷ দেশের বাজারের চাহিদা নিশ্চিত করার পর আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের কথা চিন্তা-ভাবনা করছি৷

বিশ্বের কয়টি দেশে আপনাদের এই ওষুধগুলো চলছে?

শুধু করোনার ওষুধ নয়, অন্যান্য ওষুধও তো আমরা রপ্তানি করছি আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০টি দেশে চলছে৷

আমরা দেখছি, ভারতে রেমডিসিভিরের চাহিদা অনেক বেশি৷ অনেক বেশি দামেও সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না৷ সেখানে কি আপনারা রপ্তানি করছেন?

না, ভারতে এই মুহূর্তে আমরা রপ্তানি করছি না৷

দেশের বাজারে কি রেমডিসিভিরের কোনো ঘাটতি আছে?

আমার জানা মতে, কোনো ঘাটতি নেই৷ আমি যেটা বলতে চাই, করোনার ওষুধ বলেন, টিকা বলেন, সেটার দরকার হয় আমি যখন আক্রান্ত হবো৷ কিন্তু স্কয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা যেন করোনায় আক্রান্ত না হই৷ অর্থাৎ, করোনা যেন আমাদের আক্রমণই না করতে পারে সে পদক্ষেপ আমাদের আছে৷ এই কারণে আমাদের গ্রুপ থেকে আমরা ফেসমাস্ক বাজারে দিচ্ছি৷ এছাড়া সচেতনতামূলক কাজও আমরা করছি৷ তবে করোনা হয়ে গেলে ওষুধ বা টিকার বিষয়টি আসে বটে৷