করোনার গ্রাসে জার্মানি, রাষ্ট্র অসহায়
১৫ এপ্রিল ২০২১করোনা ভাইরাস সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধা বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধীর গতি যে পরোয়া করে না, তা বার বার স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার আবার দ্রুত বেড়ে চলেছে৷ বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা ২৯ হাজার ৪২৬৷ অর্থাৎ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার ১৬০ পেরিয়ে গেল৷ টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি ও করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে ঢিলেমির মতো দুর্বলতার পাশাপাশি সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপে বিলম্বকেও এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ফেডারেল সরকারের হাতে বাড়তি ক্ষমতা আনার লক্ষ্যে সংক্রমণ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ যত দ্রুত সম্ভব সেই প্রক্রিয়া শেষ করে আইন কার্যকর করার লক্ষ্য স্থির করলেও কার্যক্ষেত্রে সেই উদ্যোগ বাধার মুখে পড়ছে৷ নীতিগতভাবে দেশজুড়ে এমারজেন্সি ব্রেক চালু করার পক্ষে ঐকমত্য দেখা গেলেও খুঁটিনাটী বিষয়গুলি নিয়ে দরকষাকষী চলছে৷ মন্ত্রিসভা আইন সংশোধনীর খসড়া অনুমোদন করার পরেও বিতর্ক দূর হচ্ছে না৷ সংক্রমণের হার নির্দিষ্ট মাত্রা পেরোলে রাতে কারফিউ জারির মতো পদক্ষেপে রদবদলের দাবি বাড়ছে৷ জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে কড়া আইনে কোনো লাভ হবে না বলে কিছু নেতা মন্তব্য করেছেন৷ সংক্রমণ সংক্রান্ত কোন তথ্যকে মাপকাঠি করা উচিত, সে বিষয়েও মতভেদ দেখা যাচ্ছে৷
এমন তর্কবিতর্কের ফলে সংসদের অনুমোদন প্রক্রিয়ার জন্য আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ তবে ঐকমত্যের খাতিরে আইনের শর্তগুলি আরও দুর্বল করতে হলে সংক্রমণের গতি কমানো যাবে না বলে অনেকে মনে করছেন৷ বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার বলেছেন, এমারজেন্সি ব্রেক কার্যকর হলেও জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ' থামানো সম্ভব হবে না৷ তার মতে, বাড়তি পদক্ষেপ নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা উচিত৷
এদিকে রাজনৈতিক চাপান উতোরের মাঝে জার্মানির হাসপাতালগুলিতে পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে৷ ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷ তাদের গড় বয়সও আগের তুলনায় অনেক কম৷ ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে করোনার মারাত্মক প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ বয়স্কদের একটা বড় অংশ করোনা টিকা পেয়ে যাওয়ায় কমবয়সিদের ক্ষেত্রে করোনার তীব্র প্রভাব বেড়ে চলেছে৷
করোনা সংক্রমণের হার কমাতে জার্মানির শ্রমিক-কর্মীদের নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগও চূড়ান্ত সাফল্য পাচ্ছে না৷ কিছু কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছায় এমন পরীক্ষা চালু করলেও বাকিরা এখনো সেই পথে যেতে প্রস্তুত নয়৷ অনেকে করোনা পরীক্ষার কিটের অভাবের অভিযোগ করছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স, এপি)