করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি
৫ আগস্ট ২০২১করোনা সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আর দেরি করতে চাইছে না জার্মানি৷ গ্রীষ্মে সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় গত বছর সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের মধ্যে সতর্কতা কমে গিয়েছিল৷ হেমন্ত ও শীতকালে কালে করোনা ভাইরাস নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে জনজীবন আবার স্তব্ধ করে দিয়েছিল৷ এবার আর সেই ভুল করতে চায় না সরকার৷ পুরোপুরি এড়াতে না পারলেও চতুর্থ ঢেউয়ের ধাক্কা যতটা সম্ভব সীমিত রাখার চেষ্টা চলছে৷ ইউরোপের অনেক দেশের তুলনায় জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার এখনো কম, যদিও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আক্রান্তদের সংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলেছে৷ আক্রান্তদের মধ্যে চরম ছোঁয়াচে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের অনুপাতও বাড়ছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার প্রায় ২০ ছুঁতে চলেছে৷
আগামী মঙ্গলবার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে কিছু পূর্বাভাষ এখনই পাওয়া যাচ্ছে৷ যেমন বদ্ধ ঘরে জমায়েতের ক্ষেত্রে মাস্ক পরার নিয়ম কমপক্ষে আগামী বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত চালু রাখা হতে পারে৷ সেইসঙ্গে করোনা টিকা কর্মসূচিতে আরও গতি আনতে নতুন সিদ্ধান্তও সম্ভব৷ এখনো পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পেয়ে গেছে, ৬৩ শতাংশ শুধু প্রথম ডোজ পেয়েছে৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টিকাদানের হার কমে চলেছে৷
এমন অবস্থায় টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বাকিদের উপর পরোক্ষ চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে৷ সংক্রমণের হার আরও বাড়লে শুধু করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ ফল দেখিয়ে হোটেল-রেস্তোঁরা, দোকানবাজার ইত্যাদি বদ্ধ জায়গায় জায়গায় প্রবেশের অধিকার বাতিল করা হতে পারে৷ এমন পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোরালো বিতর্ক চলছে৷ পেছনের দরজা দিয়ে টিকা বাধ্যতামূলক করার প্রচেষ্টা চলছে বলে কয়েকজন নেতা অভিযোগ করছেন৷ সম্ভবত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষাও বন্ধ করতে পারে সরকার৷ নতুন করে লকডাউন এড়াতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে চায় জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকার৷
বলা বাহুল্য, জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে করোনা সংকটের মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট স্পর্শকাতর৷ অন্যদিকে বিপদের অশনি সংকেত সত্ত্বেও কিছু না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না৷ ফেডারেল ও রাজ্য সরকার সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলেও নির্বাচনের মুখে দলীয় রাজনীতির স্বার্থ বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)