‘জাতীয় সংগীত আমাদের অস্তিত্বের নাম’
৯ আগস্ট ২০১৯পশ্চিমবঙ্গের ছোট পর্দার গানের প্রতিযোগ সারেগামাপা দিয়ে রাতারাতি তারকা হয়ে গেছেন মাঈনুল আহসান নোবেল৷ দুই বাংলায় তাকে নিয়ে শুরু হয় মাতামাতি৷ তবে দিন কয়েক না যেতেই বিতর্ক উসকে দেওয়ার মত মন্তব্য করে বসলেন৷ ব্যক্তিগত মতের নামে রবি ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা'র অসম্পূর্ণতা তুলে ধরলেন৷ এই গানের চেয়ে এগিয়ে রাখলেন প্রিন্স মাহমুদের ‘বাংলাদেশ' গান৷ অনলাইন সমাজমাধ্যমের যুগে কথা বায়ুতে মেশার সুযোগ খুবই কম৷ ছড়িয়ে যায় দিকে দিকে৷
তাই বক্তব্য দিতে গিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন বাংলাদেশের প্রবীণ কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম৷ তরুণদের প্রতি তার পরামর্শ - ‘‘তরুণদের প্রতি পরামর্শ- কোনটা বলবো না বলবো, এটা আগে ১০ বার চিন্তা করা উচিত৷ জাতীয় সংগীত কী হওয়া উচিত না হওয়া উচিত এটা আমাদের দায়িত্ব না, সরকারের দায়িত্ব৷''
একই রকম ভাষ্য আরও বিশদে দিলেন বাংলাদেশের আরেক সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা৷ তার কথা হচ্ছে- ‘‘আমার দেশকে যখনি আমি ভালোবাসবো- আমার পতাকাকে ভালোবাসবো, আমার জাতির জনককে ভালোবাসবো, আমার জাতীয় সংগীতকে ভালোবাসবো, জাতীয় কবিকে ভালোবাসবো৷ এইগুলোর সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা মোটেও করা উচিত না৷''
নোবেল বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে- এই দিকটিও তুলে ধরলেন তিনি৷ ‘‘আমাদের দেশকে সাম-হাউ কিন্তু রিপ্রেজেন্ট করেছে নোবেল৷ আন্তর্জাতিক মানে সে উন্নত হয়েছে৷ খুব ভালো একটা কণ্ঠস্বর৷ সে উন্নতি করুক, বাংলাদেশকে বিশ্বে প্রচার দিক সেটা আমরা কামনা করি৷ কিন্তু একই সঙ্গে তাকে আরও একটু গভীর হতে হবে৷'' নোবেলের মন্তব্য ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার আহ্বান জানিয়ে শেষ করেন ফেরদৌস আরা৷
নোবেলের মন্তব্য নিয়ে কোনো কথা বলতেই রাজি হলেন না সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিক৷ শুধু বললেন, ‘‘আমার সোনার বাংলা অপূর্ব সুন্দর গান৷ যে যা বলে বলুক, তাতে কোনো গান খারাপও হয় না ভালোও হয় না৷ তাতে রবীন্দ্রনাথ ছোটও হন না, বড়ও হন না৷''
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবেও ‘আমার সোনার বাংলা'কে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীতশিল্পী সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় আলাদা চোখে দেখেন৷ দিন কয়েক আগের টাটকা স্মৃতি জানালেন এভাবে- ‘‘একটা সত্যি কথা বলি এবার ওয়ার্ল্ড কাপ ক্রিকেট যখন হচ্ছিলো, তখন বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংগীত বাজছিলো৷ আর বাংলাদেশ যখন খেলছিলো আর আমার সোনার বাংলা যখন বাজছিলো, তখন সত্যিই গর্ববোধ হচ্ছিলো৷ ওতো বড় একটা ইন্টারন্যাশনাল, ওতো বড় একটা প্ল্যাটফর্মে বাংলা গান বাজছে, আমি বাঙালি হিসেবেই দেখি এটা কে৷''
তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় দারুণ বিশ্বাসী সুরজিৎ৷ বললেন, ‘‘নোবেলের মন্ত্যবটা একান্তই নোবেলের ব্যক্তিগত মন্তব্য৷ কেউ মানবে, কেউ মানবে না- সেটা তো হতেই পারে৷ নোবেল তার জায়গা থেকে একটা কথা বলতেই পারে, সেটা তার মত৷''
যার গান বড় করতে গিয়ে নোবেল রবি ঠাকুরের জাতীয় সংগীত ছোট করেছেন সেই প্রিন্স মাহমুদ কী বলছেন? মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে৷ ফোন ধরে নিজেই আগেভাগে বলে দিলেন, এ বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলবেন না৷ জানিয়ে দিলেন ৪ আগস্ট ফেসবুকে যা লিখেছেন, সেটাই তার মন্তব্য৷ ফেসবুকবার্তায় তার সেই পংক্তি হচ্ছে- ‘জাতীয় সংগীত আমাদের অস্তিত্বের নাম৷'
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷