জার্মানিতে টিকাদানে গতি আসছে, টিকা নিচ্ছেন ম্যার্কেল
১৬ এপ্রিল ২০২১করোনা মহামারির ‘তৃতীয় ঢেউ' জার্মানিতে সংক্রমণের হার বাড়িয়ে চললেও টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিয়ে সমালোচনা দূর হচ্ছে না৷ অবশেষে টিকা দেবার দৈনিক হার বাড়তে শুরু করেছে৷ বৃহস্পতিবার প্রায় ৭৩৯,০০০ মানুষ টিকা পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ অন্য কিছু দেশে আরো দ্রুত টিকা দেওয়া হলেও জার্মানির জন্য এটা একটা দৈনিক রেকর্ড৷ ফলে জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷ আপাতত ৬০ বছরের বেশি মানুষরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন৷ টিকাদান কেন্দ্রের পাশাপাশি ইস্টারের ছুটির পর ডাক্তারের চেম্বারেও টিকা দেবার ব্যবস্থা চালু হবার পর থেকে টিকাকরণ কর্মসূচিতে কিছুটা গতি এসেছে৷ তবে এখনো চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে অনেক ডাক্তার অভিযোগ করছেন৷
শুক্রবার টিকার প্রথম ডোজ পাচ্ছেন ৬৬ বছর বয়সি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানির টিকা নিচ্ছেন৷ ৭১ বছর বয়সি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার বুধবার টিকার প্রথম ডো়জ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷
জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট সংক্রমণের বেড়ে চলা হার সম্পর্কে আবার সতর্ক করে দিয়েছে৷ কিছু হাসপাতালে পরিস্থিতি নাটকীয় হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান লোটার ভিলার৷ বিশেষ করে কয়েকটি শহর ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আপাতত আর কোনো বেড খালি নেই৷ তিনি মনে করিয়ে দেন যে, আগের তুলনায় বেশি মানুষ টিকা পেলেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনো টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন৷ উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দৈনিক সংক্রমণের হার প্রায় ৩০,০০০ ছুঁলেও শুক্রবার সেই হার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ২৫,৮৩১৷
এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে ফেডারেল সরকারের হাতে আরও ক্ষমতা আনার উদ্যোগ চলছে৷ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আগামী সপ্তাহে সংসদে ভোটাভুটি হবার কথা৷ তবে কিছু রাজ্য সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেই আইন কার্যকর হবার আগেই রাত্রিকালীন কারফিউসহ কড়া পদক্ষেপ নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পানও রাজ্য সরকারগুলির উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সেই আহ্বান জানিয়েছেন৷ তার মতে, ঠিক সময়ে পদক্ষেপ না নিলে তার পরিণাম কী হয় গত বছরের হেমন্ত কালে তা হাড়েহাড়ে টের পাওয়া গেছে৷ তাঁর মতে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জার্মানির প্রায় সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ইচ্ছা করলে টিকা পেয়ে যাবেন৷ তখন ‘হার্ড ইমিউনিটি'-র লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে৷
করোনা ভাইরাসের আরো ছোঁয়াচে সংস্করণগুলি জার্মানিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রশাসনের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে৷ বিশেষ করে ব্রিটিশ সংস্করণটি আধিপত্য বিস্তার করছে৷ কিছু এলাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের ভেরিয়েন্টও মারাত্মক হারে ছড়িয়ে পড়ছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)