মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করার প্রস্তাব
১৪ জুন ২০২১গত বছর করোনা সংকটের শুরু থকেই প্রথমে কাপড়ের মাস্ক, তারপর মেডিকাল মাস্ক পরতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে জার্মানির মানুষ৷ সব জায়গায় খোলা আকাশের নীচে পরতে না হলেও দোকানবাজার, ট্রামে-বাসের মতো বদ্ধ জায়গায় এমন মাস্ক বাধ্যতামূলক৷ করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত কমতে থাকায় জার্মানিতে মাস্ক সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ সোমবার থেকে ডেনমার্কে ঠিক সেটাই করা হচ্ছে৷
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান, এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন৷ তার মতে, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে খোলা আকাশের নীচে মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করা যেতে পারে৷ যে সব অঞ্চলে সংক্রমণের হার অত্যন্ত কম ও যথেষ্ট বেশি মানুষ করোনার টিকা পেয়ে গেছেন, সেখানে এমনকি বদ্ধ জায়গায়ও মাস্ক না পরলেও চলে বলে তিনি মনে করেন৷ তবে তার মতে, মনে সংশয় থাকলে বিশেষ করে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরাই ভালো৷ জার্মানির বিচারমন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট রাজ্য সরকারগুলির উদ্দেশ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখার ডাক দিয়েছেন৷ বিশেষ করে স্কুলের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাস্ক পরে থাকার প্রয়োজন আছে কিনা, তা পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন৷
জার্মানির একাধিক রাজনীতিক মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করা অথবা পুরোপুরি তুলে দেবার প্রস্তাব দিলেও কিছু নেতা এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ তাদের মতে, করোনা ভাইরাস মোটেই উধাও হয়ে যায় নি৷ তাই মানুষ অসতর্ক হলে আবার সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে৷
জার্মানিতে সংক্রমণের হার কমার পাশাপাশি করোনা টিকাদানের গতিও বাড়ছে৷ চার কোটিরও বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷ ফলে জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ টিকা নেবার প্রক্রিয়ার আওতায় এসে পড়েছেন৷ দুই কোটি ১০ লাখ মানুষ টিকার দুটি ডোজই পেয়ে গেছেন৷ জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির টিকা সরবরাহে বিলম্ব সত্ত্বেও টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ সোমবার থেকে নতুন ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট চালু হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রার আশা আরও উজ্জ্বল হচ্ছে৷
টিকার ক্ষেত্রে এমন অগ্রগতির ফলে সন্তুষ্টি বাড়লেও টিকা দেবার অবকাঠামোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে৷ ডেল্টার মতো করোনা ভাইরাসের আরও ছোঁয়াচে সংস্করণ জার্মানিতেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে কমপক্ষে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য টিকার তৃতীয় ডোজ দেবার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ জনসাধারণের সার্বিক কল্যাণের জন্য নিয়মিত করোনা টিকার আরও উন্নত সংস্করণ দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে বলে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ করোনা সংকটের জন্য যে সব টিকাদান কেন্দ্র খোলা হয়েছিল, উচ্চ ব্যয়ের কারণে সেগুলি অদূর ভবিষ্যতে বন্ধ করার জন্য চাপ বাড়ছে৷ ডাক্তারের চেম্বারগুলি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)