জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেনগাজি সফর
১৩ জুন ২০১১লিবিয়ায় যা ঘটছে, তার ক্ষেত্রে জার্মানির ভূমিকা এযাবৎ কিছুটা দ্ব্যর্থক ছিল এবং আছে৷ জার্মানিই একমাত্র পশ্চিমা দেশ, যা গত মার্চে বিশ্ব নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের সময় লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের সপক্ষে ভোট দেয়নি, বরং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে৷ এছাড়া বিদ্রোহীদের ক্রান্তি পরিষদকেও জার্মানি এযাবৎ স্বীকৃতি দেয়নি, যদিও কাতারের পর এবার আমিরশাহীও আরব দেশ হিসেবে বিদ্রোহীদের স্বীকৃতি দিয়েছে৷
কিন্তু মে মাসের শেষ থেকেই বেনগাজিতে জার্মানির একটি সংযোগ দপ্তর আছে৷ সোমবার সেটারই সরকারিভাবে উদ্বোধন করলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এবং আগামীতে বার্লিনে বিদ্রোহীদের একটি অনুরূপ দপ্তর খোলা হবে বলেও শোনা যাচ্ছে৷
এছাড়া জার্মানির সদিচ্ছার অনেক নিদর্শনই ভেস্টারভেলে সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন৷ যেমন বেনগাজি, মিসরাতার হাসপাতালগুলোর জন্য ওষুধপত্র৷ আবার সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ লক্ষ ইউরোর সাহায্যের প্রতিশ্রুতি৷
কিন্তু বিদ্রোহীদের ক্রান্তি পরিষদকে স্বীকৃতি দেবার ক্ষেত্রে পরিষদের উপসভাপতি হাফিজ ঘোগা রয়টার্সকে বলেছেন, ভেস্টারভেলে নাকি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে ক্রান্তি পরিষদকে জনসাধারণের বৈধ প্রতিনিধি বলে অভিহিত করেছেন৷ তবে এখানে ‘অভিহিতের' অর্থ স্বীকৃতি কিনা, তা নিশ্চিত নয়৷ আগামীতে হতে পারে৷
লিবিয়াতে জার্মানির সৈন্য পাঠানোও নিশ্চিত নয়, যদিও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের কাছে সেই দাবিই পেশ করেছেন৷ ভেস্টারভেলে বেনগাজি যাত্রার আগেই আবার বলেন, গাদ্দাফির পতনের পরও তাঁর লিবিয়ায় সৈন্যপ্রেরণের কোনো অভিপ্রায় নেই৷ ওদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী থমাস ডেমেইজিয়ার কিন্তু অন্যরকম আভাস দিয়েছেন৷ কাজেই এ'প্রশ্নেও জার্মান সরকারের অবস্থান যে শেষমেষ কি দাঁড়াবে, তা বলার উপায় নেই৷ তবে ভেস্টারভেলের এই ঝটিকা সফরের উদ্দেশ্য সম্ভবত ক্রান্তি পরিষদের সঙ্গে সংযোগ আরো ঘনিষ্ঠ করা এবং লিবিয়ার মানুষদের জন্য বাস্তব সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ