তীব্র খাদ্য সঙ্কটের মুখে লিবিয়া, বিদ্রোহীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ
৫ জুলাই ২০১১ফ্রান্স জানিয়েছে, লিবিয়ার আন্দোলনকারীদের আর অস্ত্র সরবরাহের প্রয়োজন নেই কারণ তারা একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে৷ আর সরকারি মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম বেশ জোর দিয়েই অবশ্য জানিয়েছেন, গাদ্দাফি ক্ষমতা ছাড়ছেন না, কোন অবস্থাতেই না৷
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার মুখপাত্র এমিলিয়া কাসেল্লা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, লিবিয়ার পশ্চিমে পাহাড়ি অঞ্চলে খাদ্যের নিরাপত্তা একেবারেই নেই৷ অসংখ্য মানুষ হয়তো ঠিকমত খাবার পাচ্ছে না৷ তারা বিদেশে থেকে ত্রাণ সামগ্রীর মাধ্যমে যে খাবার আসে তার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে৷
এমিলিয়া কাসেল্লা জাতিসংঘের একটি বিশেষ মিশনে লিবিয়ায় উপস্থিত হন বেশ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে৷ পাহাড়ি অঞ্চলের নালুত, ওয়াজিন, জাদু এবং জিনটান গ্রামগুলো তারা ঘুরে দেখেন৷ তিনি বলেন, এত গ্রাম ঘুরে আমরা মাত্র দুটি গরু দেখেছি৷ এর অর্থ হল জীবন বাঁচাতে মানুষ তাদের গৃহপালিত পশু বিক্রি করে দিয়েছে নয়তো নিজেরাই তা খেয়েছে৷ আমরা কোন ছাগল বা ভেড়া দেখিনি৷
তিনি আরো বলেন, এখানে কোন ধরণের ব্যবসা-বাণিজ্য যে চলছে না তা স্পষ্টতই চোখে পড়বে৷ দোকান-পাট বন্ধ, ফেব্রুয়ারি মাসের পর কোন সরকারি কর্মচারি বেতন পায়নি৷ প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ডিম, মাছ, মাংসের কোন স্থান নেই৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি যে পরিমাণ খাবার পাঠিয়েছে এই অঞ্চলে, প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষুধাক্লিষ্ট মানুষের কাছে তা পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷
জাতিসংঘের শরণার্থী দপ্তর সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে লিবিয়ার পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে৷ অতি দ্রুত সেখানকার মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেয়া প্রয়োজন৷
এদিকে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেরার্দ লঙ্গে জানিয়েছেন, লিবিয়ার বিদ্রোহীরা নিজেরাই একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে৷ ফলে তাদের কাছে অস্ত্র সরবরাহের আর প্রয়োজন নেই৷ তারা নিজেরাই এখন বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত প্যারাশুটের সাহায্যে পশ্চিম লিবিয়ায় নাফুসা পাহাড়ের কাছে বিদ্রেহীদের জন্য অস্ত্র পৌঁছে দেয়া হয়েছে, এখন তার দরকার নেই৷ যে সব পশ্চিমা দেশ লিবিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করেছে ফ্রান্স তাদের মধ্যে অন্যতম৷
লিবিয়া সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম জানিয়েছেন, গাদ্দাফি ক্ষমতা ছাড়বেন না৷ বার্তা সংস্থা রয়টারকে তিনি একথা জানান৷ গাদ্দাফি ক্ষমতা ছাড়ছেন, অন্য দেশে আশ্রয় গ্রহণ করবেন বা ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন – এ ধরণের সংবাদের কোনটিই সত্যি নয় বলে তিনি জানান৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক