যাচ-ফিক্সিং
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩এই অপরাধী চক্রের পাণ্ডা নাকি সিংগাপুরে৷ সেখান থেকেই এত বড়ো একটা স্ক্যাম চালানো হয়৷ বড় বড় টিমের চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচেও নাকি এই অপকর্ম করা হয়েছে, বলে ইউরোপোল, বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের পুলিশ ও সরকারি কৌঁসুলির দপ্তরের তদন্তে প্রকাশ৷
ইউরোপোল-এর সৃষ্টি ইউরোপে অপরাধ রোখার জন্য৷ সেই ইউরোপোল-এর প্রধান রব ওয়েনরাইট বলেছেন, ‘‘ইউরোপীয় ফুটবলের পক্ষে এটা একটা দুঃখের দিন৷ এটা এখন ফুটবলের সততার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ খেলাটি চালানোর দায়িত্বে যাঁরা, তাঁদের এই সাবধানবাণী শোনা উচিত৷''
শোনা উচিত তো বটেই, নয়ত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্পোর্ট, কোটি কোটি ডলারের এই ‘ইন্ডাস্ট্রি' মার খেতে পারে৷ ফেয়ারনেস ছাড়া ফুটবল হতে পারে না৷ স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য ফ্যানদের যে পরিমাণ মাশুল গুণতে হয়, তা-তে তারা গট-আপ গেম দেখতে চাইবে না৷ সে কথাটা যে ফিফা-র কর্মকর্তা না হয়ে ইউরোপোলের প্রধানকে বলতে হল, এটাই দুঃখের কথা৷
তদন্ত বলেছে, খেলাগুলো হয়েছে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে৷ সন্দেহজনক ম্যাচগুলোর মধ্যে প্রায় ৩৮০টি খেলা হয়েছে ইউরোপে, বাকি ৩০০ আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন অ্যামেরিকায়৷ এই স্কেলে ম্যাচ-ফিক্সিং করার পটভূমি হল, খেলাধুলার উপর বাজি ধরাটা এখন বছরে এক ট্রিলিয়ন ডলারের একটা ইন্ডাস্ট্রি৷ মানে দিনে তিন বিলিয়ন ডলার! যার মোটা অংশটা ধরা হয় ফুটবলের ওপর৷ পান্টাররা প্রধানত এশিয়ার মানুষ৷
এক জার্মান তদন্তকারী বলেছেন, অপরাধীচক্র সারা পৃথিবীতে কুরিয়ার পাঠিয়ে ঘুস দেবার ব্যবস্থা করেছে৷ প্লেয়ারদের আর রেফারিদের ঘুস দিয়েছে৷ ১৫টি দেশে ৪২৫ জন প্লেয়ার, রেফারি, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও অপরাধীরা এই স্ক্যামে সংশ্লিষ্ট ছিল৷ জার্মান পুলিশ নাকি শ'দেড়েক এই ধরণের ঘুস দেওয়ার ঘটনার হদিশ পেয়েছে৷ ম্যাচ প্রতি এক লাখ ইউরো অবধি ঘুস দেওয়া হয়েছে৷ জার্মানিতে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে ধরা ও সাজা দেওয়া হয়েছে৷
টেলিভিশন সম্প্রচার ও ইন্টারনেটের কল্যাণে ম্যাচ চলাকালীনই আজকাল বাজি ধরা যায়৷ টেলিফোনে ইউরোপ থেকে এশিয়ায় বাজি ধরা যায়, এমন সব বাজি, যেগুলো ইউরোপে বে-আইনি৷ অপরাধীচক্র এ সব কিছুরই সুযোগ নিয়েছে৷ একটি ম্যাচ ফিক্স করার জন্য বিভিন্ন মহাদেশে মোট দশটি দেশে ৫০ জন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট থাকতে পারে, বলে জানিয়েছে জার্মান পুলিশ৷
সাধে কি ফুটবলকে বলে দ্য বিউটিফুল গেম!
এসি/ডিজি (রয়টার্স)