বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় সাত নবজাতক মারা যায়
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮বিশ্বব্যাপী নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানে নবজাতকের মৃত্যুর হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি৷ সেখানে জন্ম নেয়া ২২জন নবজাতকের মধ্যে নাকি অন্তত একজনের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে৷
তবে নবজাতকের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি– এমন দশটি দেশের মধ্যে আটটিই সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশ৷ এগুলো হচ্ছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সোমালিয়া, লেসোথো, গিনি-বিসাউ, দক্ষিণ সুদান, আইভরিকোস্ট, মালি ও চাড৷ তালিকার শীর্ষ দশের অন্য দেশটি আফগানিস্তান৷
আর নবজাতকের মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম জাপানে৷ এই তালিকার পরের দেশগুলো হচ্ছে আইসল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, স্লোভেনিয়া, সাইপ্রাস, বেলারুশ, লুক্সেমবার্গ, নরওয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া৷
ইউনিসেফের প্রতিবেদন বলছে, প্রতিবছর অন্তত ১০ লক্ষ শিশু জন্ম নেয়ার দিনই মারা যায়৷ আর ২৬ লক্ষ নবজাতক মারা যায় এক মাসের মধ্যে৷
নবজাতকের মৃত্যুর দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান টুইটারে জানিয়েছে ইউনিসেফ বাংলাদেশ৷ তারা বলছে, বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় সাত জন নবজাতক শিশু মারা যায়৷
বিষয়টি নিয়ে ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একটি ফেসবুক লাইভেরও আয়োজন করেছিল ইউনিসেফ বাংলাদেশ৷ সেখানে বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যাটি আশঙ্কাজনক বলে জানান সাকিব৷ এই সংখ্যা কমিয়ে আনতে তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন৷ এছাড়া হাসপাতালে গেলেই সিজার করিয়ে দেবে– এই আশংকায় না থেকে সবাইকে সন্তান প্রসবের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি৷ সবাইকে আশ্বস্ত করে একটি পরিসংখ্যানও উল্লেখ করেন সাকিব৷ সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশে মাত্র ১৫ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে৷
নবজাতকের মৃত্যু কমাতে...
প্রতিবেদন বলছে, নবজাতকের মোট মৃত্যুর ৮০ শতাংশই রোধ করা সম্ভব৷ এর জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী৷ আর গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার পানি ও পুষ্টিকর খাবার৷ এছাড়া জন্মের পর শিশুকে মায়ের শরীরের সঙ্গে লেপ্টে থাকার ব্যবস্থা করা ও জন্ম নেয়ার প্রথম ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে৷
ইউনিসেফ বলছে, দরিদ্র দেশগুলোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও ধাত্রীর অভাব রয়েছে৷ এছাড়া প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই৷ সংস্থার নবজাতক কর্মসূচির প্রধান উইলিবাল্ড জেক আগে তাঞ্জানিয়ায় গাইনি বিশেষজ্ঞ ছিলেন৷ নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যন্ত্রপাতির অভাবে অনেকসময় তাঁকে হাত দিয়ে ভ্রূণের অবস্থা বুঝতে হয়েছে৷
তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সীমিত সম্পদ দিয়েও নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যায় বলে মনে করছে ইউনিসেফ৷ এক্ষেত্রে রুয়ান্ডার উদাহরণ দিয়েছে সংস্থাটি৷ দেশটি নাকি ২০১৬ সালে নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৯০ সালের তুলনায় অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ)