বার্লিন শহরে ‘শিল্পীদের গ্রাম'
২১ জুলাই ২০১৬বার্লিনের রুমেল্সবুর্গার বুখট বা বে-র কাছে ‘আর্টিস্টস ভিলেজ', শিল্পীদের গ্রাম৷ বাড়িগুলো জলের ধারেই, সব বাড়ি থেকে হ্রদের জল দেখা যায়৷ কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ এলাকাটির অতীত খুব শান্তিপ্রিয় নয়৷ ১১৩ বছর ধরে এখানে একটি জেলখানা ছিল৷ ১৯৯০ সালে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ আজ তা কারো বোঝার উপায় নেই!
স্থপতি মার্কুস মাটিয়াসের বাড়ির পাঁচটি তলা মিলিয়ে বসবাসের এলাকা হল ২৪০ বর্গমিটার৷ মধ্যমণি হল একটি লফট বা ছাদের তলায় জিনিসপত্র রাখার ঘর৷ মার্কুস বলেন, ‘‘এই বাড়িটির বিশেষত্ব হল তিনতলার এই লফট, যার উচ্চতা হল সাড়ে পাঁচ মিটার৷ এখান থেকে লেকের দৃশ্য দেখা যায়৷ ঘরটাও বিরাট, এখানে সময় কাটাতে ভালো লাগে; টেলিভিশন দেখতে বা শুধু বসে বসে বাইরের দৃশ্যটা উপভোগ করতে৷''
লফট-টা গোটা পরিবারের প্রিয়৷ এখানেই সকলে মিলে বসা হয়, পার্টি করা হয়৷ মাঝের দেওয়ালটির একটি রহস্য আছে: তিন মিটার উঁচু পাল্লাগুলোর পিছনে বাড়ির ‘বার'-টি লুকনো আছে৷ মার্কুস ও তাঁর স্ত্রী দু'জনেই স্থপতি; দু'জনে মিলে বাড়ির ভেতরটা সাজিয়েছেন ২০০৬ সালে৷
মার্কুস বাড়ির অন্য তলাগুলোও দেখালেন, ‘‘এই তলাটায় আমাদের শোবার ঘর, সেই সঙ্গে স্নানের ঘর৷ আইডিয়াটা ছিল, দরজাগুলো খোলা থাকলে পাল্লাগুলো এমনভাবে দেওয়ালের সঙ্গে মিশে যাবে যে, সেগুলো দেখাই যাবে না৷ ফলে সব কিছু খুব খোলামেলা লাগবে৷''
দেওয়ালের ছবিগুলো দিয়ে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে৷ মারকুস জানালেন, ‘‘এটা হল বাড়ির দোতলা৷ এই তলায় আমাদের মেয়ের ঘর৷ আমরা এই তলায় একটা গেস্টরুমও রাখতে চেয়েছিলাম৷ এই তলায় বেশ কয়েকটা ছোট ছোট ঘর আছে; আইডিয়াটা ছিল, করিডরটা এমনভাবে তৈরি করা হবে, যাতে সব ক'টি দরজা ক্যাবিনেটের দরজার মতো হবে, মনে হবে, যেন একটি ক্যাবিনেট, মানে আলমারির মধ্যে বসে আছি৷ অথচ দরজাগুলো খুললেই নানা ঘর, এছাড়া অতিথিদের জন্য টয়লেট৷''
পুরো বাড়িতে দরজাগুলি এমনভাবে তৈরি, যাতে খোলামেলা পরিবেশ অক্ষুণ্ণ থাকে৷ কিচেনের স্লাইডিং দরজাটা একাধারে দেওয়াল ও ব্ল্যাকবোর্ড৷ মারকুস বললেন, ‘‘গোড়া থেকেই আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, ঘরগুলো খোলামেলা রাখার৷ বাড়িতে ঢোকার পরেই বড় করিডর, সেখান থেকে কিচেন৷ কিন্তু আমরা আরো চেয়েছিলাম যে, কিচেনটার দরজা বন্ধ করা সম্ভব হবে; সেজন্যই বড় স্লাইডিং ডোর-টা লাগানো হয়েছে, যাতে কিচেনটা পুরোপুরি আলাদা করে দেওয়া যায়৷''
কিচেন থেকে বেরোলে সামনে ৭৫ বর্গমিটার আয়তনের একটি বাগান, যেখান থেকে এককালীন ‘জেলখানা'-টিকে দেখা যায়৷ মারকুস জানালেন, ‘‘প্রথম যখন এখানে আসি, তখন এখানে শুধু বালি ফেলা ছিল... জেলখানা ছাড়া আর কিছু ছিল না৷ আমরা এখানে আসার বছর দু'য়েক বাদে জেলখানার জায়গায় এই সব ফ্ল্যাটবাড়ি বানানো হয়৷ সেই সব ফ্ল্যাটে এখন লোক থাকে৷''