রাষ্ট্রদূতদের পর কাশ্মীরে এবার মন্ত্রীরা
১৬ জানুয়ারি ২০২০পরিকল্পনাটা করেছেন অমিত শাহ৷ ছ দিন ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা দলে দলে জম্মু ও কাশ্মীর যাবেন৷ সেখানে গিয়ে লোককে বোঝাবেন, ৩৭০ ধারা বিলোপ করার ফলে আদতে কতটা লাভ হয়েছে। সেই সঙ্গে মন্ত্রীরা নিজেদের মন্ত্রকের উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণে জোর দেবেন৷ খতিয়ে দেখবেন কতটা কাজ হচ্ছে৷ ৩৭০ বিলোপের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদে দাবি করেছিলেন, এ বার উন্নয়নের পথে হাঁটবে কাশ্মীর৷ দেশের মূলস্রোতে মিশে যাবে৷ সেই উন্নয়ন নিশ্চিত করাটা হবে মন্ত্রীদের দায়িত্ব৷
বিজেপি মুখপাত্র সুদেশ বর্মা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হচ্ছে৷ এই সময় তাই উন্নয়নের পথে চলাটা খুবই জরুরি৷ মন্ত্রীরা কাশ্মীরে গিয়ে সেই উন্নয়ন নিশ্চিত করবেন৷ তাতে গতি আনবেন৷ মন্ত্রীদের কাশ্মীর যাওয়াটা নতুন নয়৷ তবে এতজন মন্ত্রীর সফর অবশ্যই আগে হয়নি৷ এর মধ্যে একটা বার্তা দেওয়ার প্রয়াস অবশ্যই আছে৷''
প্রথমে ইইউ র এমপিদের সফর, তারপর অ্যামেরিকা সহ বেশ কিছু দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে যাওয়া, এ বার ৩৬ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফরের পিছনে বার্তা দেওয়ার চেষ্টাটা হল, কাশ্মীর এখন অনেকটাই স্বাভাবিক৷ দেশ ও বিদেশের কাছে এই বার্তাটা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছে মোদী সরকার৷ কিন্তু সরকারের এই দাবি সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দিচ্ছেন কাশ্মীরের নেতারা৷ প্রাক্তন বিধায়ক ও সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''মন্ত্রীরা আসছেন বিজেপির প্রচার করতে৷ ৩৭০ বিলোপের পর কতটা উন্নয়ন হয়েছে? পাঁচ মাস কেটে যাওয়ার পর কতটা বিনিয়োগ হয়েছে? কতজন চাকরি পেয়েছেন? কাশ্মীরিরা তো চাকরি পাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছে৷ এখন চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিও সর্বভারতীয় ভিত্তিতে হয়৷ লোকের জীবনধারণের ন্যূনতম জিনিস পাচ্ছে না৷ আর কেন্দ্রীয় সরকার বড় বড় দাবি করে যাচ্ছে৷''
কংগ্রেস বলছে, পরিস্থিতি যদি এতটাই স্বাভাবিক, তা হলে এতজন প্রচারকারী পাঠাবার কী দরকার? কপিল সিবালের বক্তব্য, ''অমিত শাহ বলেছিলেন, কাশ্মীরে সবকিছু স্বাভাবিক। তা হলে এতজন প্রচারকারী পাঠাবার দরকার কী? পাঠাতে হলে অন্যদের পাঠাতেন, যারা প্রচারকারী নন৷ তাঁরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করতেন৷''
মন্ত্রীদের মধ্যে রবিশঙ্কর প্রসাদ যাচ্ছেন সোপরো, পীয়ূষ গোয়েল শ্রীনগরে, কিষেণ রেড্ডি যাবেন গন্ধরবাল, ভি কে সিং উধমপুর এবং স্মৃতি ইরানি কাটরা যাবেন৷ অন্য মন্ত্রীরাও জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে প্রচারের কাজ করবেন৷ কিন্তু তাতে কাশ্মীরের লোকের মন পাওয়া যাবে কি?