সুদান ও লিবিয়ার নেতাদের দূরাবস্থায় অস্বস্তিতে চীন
২৮ জুন ২০১১আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের প্রধান কৌঁশলি লুইস মোরেনো ওকাম্পো মঙ্গলবার বলেছেন, বড়জোর আর কয়েক মাসের মধ্যেই গাদ্দাফির খেলা খতম হয়ে যাবে৷ সঙ্গে তাঁর পুত্র সাঈফ আল ইসলাম ও গোয়েন্দা প্রধান আবদুল্লাহ আল সেনুসি'কেও কারাবাস করতে হবে – এবিষয়ে তিনি প্রায় নিশ্চিত৷ তবে গাদ্দাফি লিবিয়া ত্যাগ না করলে তাঁকে আটক করা সম্ভব নয়, কারণ সরাসরি কোনো দেশে ঢুকে সেদেশের নেতাকে আটক করার এক্তিয়ার আদালতের নেই৷ সম্প্রতি প্রাক্তন ইয়ুগোস্লাভিয়ায় পলাতক অভিযুক্তদের একের পর এক যেভাবে দ্য হেগ'এ আনা সম্ভব হয়েছে, তার ফলে অবশ্য আন্তর্জাতিক আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়ে গেছে৷ আত্মবিশ্বাসের এই অবস্থান থেকেই গাদ্দাফিকে হুঁশিয়ার করলেন ওকাম্পো৷ গাদ্দাফির সরকার অবশ্য এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ৷ বিদ্রোহীদের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘গাদ্দাফির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির পর আমরা আর একজন যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত নয়৷''
আফ্রিকার নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও চীনের প্রতিক্রিয়া
কিন্তু চীন আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের এই মনোভাবের সঙ্গে একমত নয়৷ সরাসরি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না করলেও ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে এভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার বিষয়ে বেইজিং অত্যন্ত অস্বস্তিতে ভুগছে৷ সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির এই মুহূর্তে বেইজিং সফর করছেন৷ চীনের উচিত, তাঁকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের হাতে তুলে দেওয়া৷ তার বদলে চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা জানাচ্ছেন৷ কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাই চীনের সরকারি নীতি৷
পরবর্তনশীল এই পরিস্থিতিতে চীনের ভূমিকা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন আসলে এক উভয় সংকটে পড়েছে৷ একদিকে সেদেশ গোটা বিশ্ব – বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশের উপর প্রভাব বাড়াতে চায়৷ কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলি যেভাবে সক্রিয়ভাবে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে এবং লিবিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা চলছে, তা বেইজিং'এর কাছে অত্যন্ত অস্বস্তিকর৷ অন্যদিকে নতুন গণতান্ত্রিক শক্তিকেও উপেক্ষা করতে চায় না চীন৷ তাই অতীতের নীতি থেকে সরে এসে লিবিয়ার বিরোধী শক্তির প্রতিনিধিদের চীনে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের গুরুত্ব স্বীকার করে নিয়েছে সেদেশের সরকার৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক