1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৭০টি আসন নির্ধারণ করবে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্য

৩০ এপ্রিল ২০২১

পশ্চিমবঙ্গে কোন দল ক্ষমতায় আসবে? ফলাফল ২ মে। তার আগে দেখে নেব বুথ ফেরত সমীক্ষার রিপোর্ট।

https://p.dw.com/p/3snoa
Westbengalen Wahl Nandigram
শেষ হাসি কে হাসবে, বিজেপি না তৃণমূল, জানা যাবে ২ মে। ছবি: Syamantak Ghosh/DW

কঠিন করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভোটগ্রহণ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। আট পর্বের নির্বাচনে গুলি চলেছে। মৃত্যু হয়েছে। বুথ দখল, রিগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। করোনায় মৃত্যু হয়েছে প্রার্থীর। সব মিলিয়ে নাটকীয় নির্বাচন হয়েছে। সমানে সমানে লড়াই করেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর জোটও জমি ছাড়েনি। শেষ পর্যন্ত কী হবে? কে দখল করবে পশ্চিমবঙ্গের মসনদ, তা জানা যাবে আগামী ২মে। তার আগে বহু সংস্থাই বুথ ফেরত সমীক্ষা করেছে এবং করছে। ডিডাব্লিউ-ও নিজেদের মতো করে সমীক্ষা করেছে।

প্রথমেই দেখে নেওয়া যাক, অন্য সংস্থাগুলির সমীক্ষার ফলাফল কী?

এবিপি আনন্দ সি ভোটার সমীক্ষা

এই সমীক্ষায় অনেকটাই এগিয়ে আছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মোট ২৯৪টি আসন। জেতার জন্য ম্যাজিক ফিগার ১৪৮। অর্থাৎ, যে দল ১৪৮ এর বেশি আসন পাবে, তারাই সরকার গঠন করতে পারবে।

এবিপি আনন্দ সি ভোটারের সমীক্ষা অনুযায়ী তৃণমূল পেতে পারে ১৫২ থেকে ১৬৪টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ১০৯ থেকে ১২১টি আসন। জোট পেতে পারে ১৪ থেকে ২৫টি আসন। এই সমীক্ষার মতে, তৃণমূল পেতে পারে ৪২ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেতে পারে ৩৯ শতাংশ ভোট। জোট পেতে পারে ১৫ শতাংশ ভোট। অন্যান্যরা পেতে পারে ৪ শতাংশ ভোট।

জি নিউজের সমীক্ষা

জি নিউজের সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত। সেখানে বিজেপি পেতে পারে ১৪৪টি আসন। তৃণমূল পেতে পারে ১৩২টি আসন। জোট পেতে পারে ১৫টি আসন। অন্যান্যরা পেতে পারে একটি আসন। অর্থাৎ, কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের বিধায়কের সাহায্য প্রয়োজন। তবে অঙ্কের হিসেবে এগিয়ে বিজেপি।

রিপাবলিক সিএনএক্স

রিপাবলিক টিভি এবং সিএনএক্স-এর সমীক্ষায় বিজেপি সরকার গড়ার অবস্থায় আছে। তাদের সমীক্ষা বলছে, বিজেপি পেতে পারে ১৩৮ থেকে ১৪৮টি আসন। তৃণমূল পেতে পারে ১২৮ থেকে ১৩৮টি আসন। জোট পেতে পারে ১১ থেকে ২১টি আসন। অন্যান্যরা পেতে পারে এক থেকে তিনটি আসন।

টিভি নাইন পোলস্ট্র্যাট

টিভি নাইন পোলস্ট্র্যাটের হিসেবে আবার অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোাধ্যায়ের দল পেতে পারে ১৪২ থেকে ১৬৪টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ১২৫ থেকে ১৩৫টি আসন। জোট পেতে পারে ১৬ থেকে ২৬টি আসন।

ইন্ডিয়া টুডে

ইন্ডিয়া টুডের সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত। বিজেপি ১৩৪ থেকে ১৬০টি আসন পেতে পারে। তৃণমূল ১৩০ থেকে ১৫৬টি আসন পেতে পারে। জোট শূন্য থেকে দুইটি আসন পেতে পারে। অন্যান্যরা একটি আসন পেতে পারে।

ডিডাব্লিউ-র সমীক্ষা

ভোট চলাকালীন ডিডাব্লিউ নিজেদের মতো করে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। গোটা রাজ্যের প্রচুর ভোটারের মতামতের ভিত্তিতে বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত পাওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ডিডাব্লিউ এই বুথ ফেরত সমীক্ষায় আরো কয়েকটি সংস্থার রিপোর্টের সাহায্য নিয়েছে। প্রতিটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নিজেদের রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্ট তৈরির সময় ভোটের আগের কিছু সমীক্ষার ডেটারও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যে কোনো বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই তিন থেকে পাঁচ শতাংশ ভ্রান্তির সম্ভাবনা থাকে। এবং বহু সময়েই দেখা যায়, ফলাফলের সঙ্গে বুথ ফেরত সমীক্ষার রিপোর্ট মেলে না। এ ক্ষেত্রেও যে তেমন হবে না, তার জোর দিয়ে বলা যায় না।

ডিডাব্লিউয়ের সমীক্ষায় এগিয়ে তৃণমূল। তবে বিজেপিও খারাপ জায়গায় নেই। জোট বহু আসনেই ভোট কেটেছে বলে রিপোর্টে ধরা পড়েছে। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ৭০টি বিধানসভা আসনে পাঁচ শতাংশের কম ব্যবধানে ফয়সলা হতে পারে বলে ডিডাব্লিউয়ের সমীক্ষায় উঠে এসেছে। পাঁচ শতাংশের কম ব্যবধানের আসন যে কোনো পক্ষের দিকে যেতে পারে। এক হাজার বা তারও কম মার্জিনে এই ধরনের আসনের ফলাফল নির্ধারিত হয়। ফলে ৭০টি আসনের ফলাফলই এবারের ভোটের নির্ধারক শক্তি বলে মনে করছে ডিডাব্লিউ।

এ কেমন রাজনীতির ভাষা: পবিত্র সরকার

ডিডাব্লিউয়ের সমীক্ষা

তৃণমূল পেতে পারে ১৪৪ থেকে ১৬৪টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ৭৫ থেকে ১০৪টি আসন। জোট পেতে পারে সাত থেকে ২২টি আসন। অন্যান্যরা পেতে পারে শূন্য থেকে তিনটি আসন। 

পাহাড়ের তিনটি আসন দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কার্শিয়াং ধরা নেই। সেখানে লড়াই করছে মূলত তিনটি দল। বিজেপি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (গুরুং), গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (বিনয়)। তৃণমূল কংগ্রেস গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুইটি দলকেই সমর্থন দিয়ে রেখেছে। প্রকাশ্যে দুইটি দলই তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বললেও ফলাফলের পরে তারা কী অবস্থান নেয়, তা স্পষ্ট নয়। ফলে সমীক্ষায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুইটি দলকেই অন্যান্যর মধ্যে রাখা হয়েছে। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে দুইটি আসনে ভোট হয়নি। নাটাবাড়ি আসনের সমীক্ষা ডিডাব্লিউয়ের কাছে যথেষ্ট নির্ভুল বলে মনে হয়নি। ফলে ওই আসনটিকেও সমীক্ষা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কয়েক মাস আগে বিহারের নির্বাচনে প্রায় সমস্ত সমীক্ষকই মনে করেছিলেন, সেখানে শাসক জোট এনডিএ জিততে পারবে না। জয় হবে বিরোধী মহাজোটের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টান টান লড়াইয়ের পরে সেখানে জয় হয়েছে এনডিএ-এর। একাধিক আসনে হাজারেরও কম মার্জিনে জয় নির্ধারিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৭০টি আসনে যদি পাঁচ শতাংশেরও কম মার্জিনে ফলাফল নির্ধারিত হয়, তা হলে জয় যে কারও হতে পারে।

 

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো