একের পর এক নেতিবাচক খবর
১৯ অক্টোবর ২০১৫জার্মানির অন্যতম পত্রিকা ‘ডেয়ার স্পিগেল' এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হতে জার্মানির বিডিং কমিটি ফিফা সদস্যের ঘুসের অর্থ জোগানের জন্য একটি তহবিল (স্লাশ ফান্ড) গঠন করেছিল৷ এ সংক্রান্ত তথ্য তাদের কাছে থাকার কথা জানায় স্পিগেল৷ ঐ বিডিং কমিটির প্রধান ছিলেন ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার৷ জার্মান ফুটবল ফেডারেশন বা ডিএফবির বর্তমান প্রধান ভল্ফগাং নিয়ার্সবাখ-ও ঐ কমিটিতে ছিলেন৷ স্পিগেল-এর দাবি, তহবিল গঠনে ২০০০ সালে জার্মান কোম্পানি আডিডাস-এর তখনকার প্রধান নির্বাহী রব্যার্ট লুইস-ড্রেফুস-এর কাছ থেকে ১০.৩ সুইস ফ্রাংক ধার নিয়েছিল বিডিং কমিটি৷ তারপর ২০০৫ সালে ড্রেফুসের ধার শোধ করতে বিডিং কমিটি ফিফার একটি অ্যাকাউন্টে ঐ পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়৷ এই অর্থ ফিফার ২৪ সদস্যের নির্বাহী কমিটির চার এশীয় সদস্যকে ঘুস দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে স্পিগেল৷ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১২-১১ ভোটে হারিয়ে জার্মানি ২০০৬ সালের আয়োজক হতে পেরেছিল৷ নিউজিল্যান্ড ভোটদান থেকে বিরত থাকে৷
স্পিগেলের এই প্রতিবেদন জার্মান ফুটবল ফেডারেশনকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে৷
জার্মান রাজনীতিবিদরা এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার অবিলম্বে তদন্ত শুরুর দাবি করেছেন৷
এদিকে, জার্মান ফুটবল ফেডারেশন এক বিবৃতিতে ফিফাকে ২০০৫ সালে অর্থ দেয়ার কথা স্বীকার করলেও সেটা ঘুস দেয়া বা ধার শোধ করা সংক্রান্ত নয় বলে দাবি করেছে৷
বেকেনবাওয়ারও এক বিবৃতিতে ঘুস দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন৷
জার্মানির বিরুদ্ধে ঘুস দেয়ার এই অভিযোগ ‘খতিয়ে দেখা হচ্ছে' বলে সোমবার জানিয়েছেন ফ্রাংকফুর্টের প্রধান প্রসিকিউটর নাডিয়া নিসেন৷ তবে এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়নি বলেও জানান তিনি৷
ডয়চে ভেলের ক্রীড়া বিভাগের সম্পাদক ইয়োশা ভেবার মনে করেন, স্পিগেলের প্রতিবেদন সত্য হলে নিয়ার্সবাখ ও জার্মান ফুটবলে ‘কাইসার' বলে পরিচিত বেকেনবাওয়ারের ফুটবল সংক্রান্ত কার্যক্রমের শেষ পরিণতি ঘটবে৷ জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের পরিচালন কমিটি সম্ভবত তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ ভেবার বলেন, ২০০৬ সালের আয়োজক হিসেবে জার্মানির নাম ঘোষিত হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল৷ নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধি কি জার্মানিকে জেতাতে ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন কিনা – সে বিষয়ে কেন তখন প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়নি? পরবর্তী সময়েও ফিফার সেই সময়কার এশীয় সদস্য দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও সৌদি আরবে যথাক্রমে জার্মান কোম্পানি মার্সিডিজ এর সন্দেহজনক বিনিয়োগ ও অস্ত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে৷
জার্মানির বিরুদ্ধে ঘুস দেয়ার অভিযোগ নিয়ে কয়েকজন টুইটার ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
জার্মানি ঘুস দিয়েছে, আপনার বিশ্বাস হয়? জানিয়ে দিন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷