জার্মানিতে বহিরাগতদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে
৩০ জুলাই ২০২১ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে একই সময়ে জার্মানির স্কুলগুলিতে গ্রীষ্মের ছুটি পড়ে না৷ যাত্রীদের ভিড় এড়াতে রাজ্য অনুযায়ী প্রায় ছয় সপ্তাহের ছুটির সময়কাল আগে-পরে স্থির করা হয়৷ ফলে ছুটির মরসুম কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে৷ চলতি বছর ছুটির মরসুমের আগে করোনা সংক্রমণের হার অত্যন্ত কমে গেলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তা ধীরে হলেও লাগাতার বেড়ে চলেছে৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী বিদেশে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফেরা মানুষের মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বাড়ছে৷ মূলত স্পেন, তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডসে গেলে সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে৷ ক্রোয়েশিয়া ও গ্রিসে গিয়েও আক্রান্ত হচ্ছেন জার্মানির মানুষ৷ তবে প্রায় ৮০ শতাংশ সংক্রমণ জার্মানির মধ্যেই ঘটছে৷
এমন পরিস্থিতিতে জার্মানিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে যাত্রীদের নেগেটিভ করোনা টেস্ট দেখানোর নিয়ম চালু করার জন্য চাপ বেড়েই চলেছে৷ সম্ভবত শুক্রবারই জার্মানির সরকার সেই ঘোষণা করবে৷ সে ক্ষেত্রে রবিবার ১লা আগস্ট থেকেই যে কোনো দেশ থেকে ও যে কোনো পথে জার্মানিতে প্রবেশ করতে হলে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষদের নেগেটিভ করোনা টেস্ট দেখানো বাধ্যতামূলক হয়ে উঠবে৷ তবে টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের হয়তো এই নিয়মের বাইরে রাখা হবে৷ ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এত দ্রুত এমন কড়া নিয়ম চালু করার পক্ষে সওয়াল করে বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার খাতিরে এমন পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে৷
জার্মানির সরকার এমন কড়া নিয়ম চালু করলেও বাস্তবে তা কার্যকর করা কতটা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে৷ ফেডারেল পুলিশকর্মী সংগঠনের এক কর্মকর্তা মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে জার্মানিতে প্রায় ৩,৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থল সীমান্তে যাতায়াতের উপর নিয়ন্ত্রণ কার্যত অসম্ভব৷ এমনকি বহিরাগতদের উপর মাঝেমধ্যে ‘ব়্যানডম চেক' করতে গেলেও যত সংখ্যক পুলিশ বা অন্যান্য বিভাগের কর্মীর প্রয়োজন পড়বে, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত কঠিন হবে৷
করোনা সংকটের কারণে জার্মানিতে পণ্য ও যন্ত্রাংশের সরবরাহ বেশ কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে৷ এবার সীমান্তে কড়াকড়ি হলে আমদানি-রপ্তানির উপর আরও চাপ পড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট শিল্পজগত সতর্ক করে দিচ্ছে৷ বিশেষ করে ট্রাক থামিয়ে চালকদের করোনা টেস্টের ফল দেখা হলে মূল্যবান সময় নষ্ট হবে এবং সীমান্তে যানজটেরও আশঙ্কা রয়েছে৷ রপ্তানি শিল্পক্ষেত্র থেকে জাতীয় স্তরে বিচ্ছিন্ন বিধিনিয়মের বদলে ইউরোপীয় সমাধানসূত্রের আহ্বান জানানো হয়েছে৷
যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার নিয়ম চালু হলে অনেক মানুষ জটিলতা এড়াতে করোনা টিকা নেবার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, ফ্রান্স, ইটালি ও গ্রিসের মতো দেশে সরকার কড়া বিধিনিয়ম চালু করার ঘোষণা করার পর আচমকা টিকা নেবার হিড়িক পড়েছিল৷ টিকা না নিয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হলে অনেক দেশের মানুষ সংশয় বা আলস্য কাটিয়ে করোনা টিকা নিয়েছেন৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)