1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন নির্বাচনের কমিশন: সরকারের ভূমিকাই বড়

২১ আগস্ট ২০২১

বাংলাদেশে আর পাঁচ মাস পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা৷ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে নতুন নির্বাচন কমিশন৷ ফলে পরবর্তী কমিশন কিভাবে গঠন করা হবে, কারা থাকতে পারেন তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3zK9P
বাংলাদেশে আর পাঁচ মাস পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা৷ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে নতুন নির্বাচন কমিশন৷ ফলে পরবর্তী কমিশন কিভাবে গঠন করা হবে, কারা থাকতে পারেন তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman

২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে৷ ২০১৭ সালে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এই কমিশন গঠন করা হয়েছিন৷ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নাম চূড়ান্ত করতে হবে৷

জানা গেছে, এবারও রাষ্ট্রপতি সংবিধান এবং আইনের আলোকে সার্চ কমিটির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দিবেন৷ ২০১২ সালেও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়৷ তার আগে সংবিধান সংশোধন করে কমিশন সদস্য বাড়িয়ে পাঁচজন নির্দিষ্ট করা হয়৷ একজন নারী সদস্য রাখার বিধানও যুক্ত করা হয়৷

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুইবার সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়৷ এর বাইরে আরো দুইবার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা হয়৷ কিন্তু সেই আলোচনায় কমিশন গঠনে সব দল একমত হতে পারেনি৷

হারুন অর রশীদ

সরকারের সূত্রগুলো বলছে, এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমেই কমিশন গঠন করা হবে৷ সার্চ কমিটিতে সবার নাম দেয়ার সুযোগ থাকবে৷ কমিটি যাদের নাম সুপারিশ করবে তাদের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন৷ এটা সাংবিধানিক নিয়োগ৷ তারা পদত্যাগ না করলে তাদের অপসারণের সাধারণ কেনো বিধান নেই৷

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন এবং তারা সংবিধান ও আইনের অধীনে স্বাধীনভাবে কাজ করার বিধান৷ তবে রাষ্ট্রপতিকে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়োগ দিতে হয়৷

বিএনপির এমপি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘‘সার্চ কমিটি বা রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন মূখ্য নয়৷ মূখ্য হলো সরকারের ভূমিকা৷ যারা সরকারে থাকেন তারা যদি কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেন এবং সহযোগিতা করেন তাহলে তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন৷ আর এজন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ সরকার৷ আওয়ামী লীগ তো সংবিধান সংশোধন করে নিরপেক্ষ বা কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে৷ তারা তো কাজ করবেন দলীয় সরকারের অধীনে৷’’

মাহবুব উল আলম হানিফ

তিনি বলেন, ‘‘সার্চ কমিটি হোক আর সবার সাথে আলোচনা করেই হোক, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন লাগবে৷ কিন্তু তার আগে নির্বাচন ব্যবস্থাকে তো ফিরিয়ে আনতে হবে ৷ সেটা করতে হবে সরকারকে৷ পুলিশ প্রশাসন তো সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ কমিশন তো সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না৷ এরজন্য আইন করতে হবে৷’’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো, তখন তারা কেন আলাদা আইন করেনি? আর বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত৷ তারা জনগণের জন্য কাজ করছে৷ তাহলে নিরপেক্ষতা নিয়ে কেন প্রশ্ন? নির্বাচন কমিশনকে আরো ভালোভাবে ও স্বাধীনভাবে কাজ করা নিয়ে বিএনপির যদি কোনো প্রস্তাব থাকে তাহলে তারা তা দিতে পারে৷ সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিএনপির ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে লাভ নাই৷ তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ তারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে৷ তাদের উচিত জনগণের কাছে গিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করা৷ নির্বাচন কমিশন নিয়ে ভাবার দরকার নাই৷’’

ড. তোফায়েল আহমেদ

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, ‘‘সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি আলাদা আইন করা দরকার৷ সংবিধানে আইনের কথা বলাও আছে৷ আইন যদি করা হয় তখন তারা আইনের আলোকে কাজ করতে পারবেন৷ এখন যেটা হয় তারা সেটা পারেন না৷ তবে সেজন্য যোগ্যতা সম্পন্ন, সৎ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তিও দরকার৷ কারণ স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা ও যোগ্যতাও থাকতে হয়৷ শামসুল হুদা তো দলীয় সরকরের অধীনেও নির্বাচন করেছেন, তাকে নিয়ে তো এত বিতর্ক হয়নি৷’’

তার মতে, ‘‘সার্চ কমিটি করে বা সর্বদলীয় করে কোনো লাভ নাই৷ কারণ তারা দলীয় আনুগত্য করে৷ আর সার্চ কমিটি তো আইনে নাই৷ তাই সংবিধানে আইনের যে কথা আছে সেই আলোকে আইন করতে হবে৷ তাহলে আইনের আওতায় যোগ্য লোক নিয়োগ পাবেন৷ আইনে যোগ্যতার কথা বলা থাকবে৷ আর তাদের সরকার যেভাবে সহযোগিতা করবে তাও বলা থাকবে৷ তারা নির্বাচনের সময় পুলিশ বা প্রশাসন কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন তাও বলা থাকবে৷ তাহলে তারা মনে হয় স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে৷ একবার নিয়োগ করলেই তাদের আর অপসারণ করা যাবে না৷ তারা যা খুশি তাই করবেন, তা হয় না৷ হাইকোর্টের বিচারপতিদের যেভাবে ইমপিচ করা যায় তাদের করা যায়৷ কিন্তু তার জন্য আইন করে ব্যবস্থা চালু করতে হবে,’’ বলেন এই বিশেষজ্ঞ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান