1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিউজিলান্ড ম্যাচ নিয়ে তিন সাবেক অধিনায়কের ভাবনা

৩ জুন ২০১৯

দাপুটে জয়ে দুরন্ত সূচনা করলো বাংলাদেশ৷ওভালে বুধবারের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড৷একাদশের হিসেবটা কেমন হবে?  উইনিং কম্বিনেশনে পরিবর্তন চান না আকরাম খান ও খালেদ মাসুদ পাইলট৷ তবে মোসাদ্দেককে সরিয়ে রুবেলকে জায়গা দিতে চান আশরাফুল৷

https://p.dw.com/p/3JiIs
London Oval Cricket WM Südafrika - Bangladesch
ছবি: Getty Images/A. Davidson

তিন সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ডয়চে ভেলেকে৷

 

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে, দলে কোনো পরিবর্তন না আনাটা ভালো হবে: আকরাম খান

দল যখন জয়ের ধারায় থাকে, তখন পরিবর্তন না আনাটা শ্রেয়৷ আমার কাছে মনে হয়, দলের জন্য ব্যাটিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বোলিংটা সমান গুরুত্বপূর্ণ৷ একইসঙ্গে, ফিল্ডিংটাকে খাটো করে দেখারও কোনো সুযোগ নেই৷ প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ একটি টিম হয়ে খেলেছে এবং সাফল্য এসেছে৷ পরের ম্যাচেও এই উইনিং কম্বিনেশনটা থাকা জরুরি৷ তাই আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে, দলে কোনো পরিবর্তন না আনাটা ভালো হবে৷ একটি দলের জন্য ৫/৬ ব্যাটসম্যানই যথেষ্ট৷ সেদিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশকে সৌভাগ্যবান বলা যায়৷ কারণ এই দলে ৭ জন ব্যাটসম্যান খেলতে পারছে৷ সত্যি বলতে, একটি দলে এর বেশি ব্যাটসম্যানের দরকার পড়ে না৷ কারণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে বোলিংয়ের শক্তি সঞ্চয় করাটা দলের জয়ের জন্য অনস্বীকার্য৷ সেক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, সাইফুদ্দিন একজন ভালো অলরাউন্ডার৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে আরো ভালো করবে এবং পরিণত হবে বলেই আমার বিশ্বাস৷ এখন সে যেভাবে দলকে সাপোর্ট দিচ্ছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ সে মূলত অলরাউন্ডার, তবে বোলিংয়ে যদি ভালো পারফর্ম করতে পারে, দল অনেক বেশি উপকৃত হবে৷ এটা ঠিক বাংলাদেশ দলে একজন রুবেল হোসেন আছে৷ কিন্তু অভিজ্ঞ এই পেসারকে খেলাতে পারছে না বাংলাদেশ৷ সে ভালো পারফরমার হওয়া সত্ত্বেও, উইনিং টিম কম্বিনেশনের কথা মাথায় রেখে পরিবর্তন আনা ঠিক হবে না৷ আর এটাকে আমি রুবেলের জন্য দুর্ভাগ্যই বলবো৷

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেতে, টাইগারদের নিজেদের এই গতিটা ধরে রাখতে হবে৷ প্রথম ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ছোটো ছোটো যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে মনোযোগী হতে হবে দলের প্রতিটি সদস্যকে৷ তাহলে, দল ভালো ক্রিকেট খেলবে এবং জয় আসবে, এই বিশ্বাস রাখতেই পারি৷

বাংলাদেশ একটি পরিপূর্ণ দল, যেকোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা আছে : খালেদ মাসুদ পাইলট

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা কেমন হবে, সেটা নিয়ে গুঞ্জনের কমতি ছিল না৷ বিশ্বকাপের ঠিক আগে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের মধ্য দিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল টাইগাররা৷ বিশ্বকাপেও শুরুটাও হয়েছে দারুণ৷ বাংলাদেশকে একটি পরিপূর্ণ দল বলা যায়৷ যেকোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা আছে তাদের৷ তাই মাশরাফীদের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে৷

রাবাদার নেতৃত্বে সাউথ আফ্রিকার যে বোলিং আক্রমণ সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান অসাধারণ খেলেছে৷ ইমরান তাহিরসহ সব বোলারের ওপর প্রভাব খাটিয়ে ব্যাট করেছে টাইগাররা৷ প্রথম খেলার পর বলতেই হবে, খেলোয়াড়দের একক নৈপুণ্য যেমন ছিল, ঠিক তেমনি ছিল সম্মিলিত প্রচেষ্টা৷ আমি বিশ্বাস করি, নিউজিল্যান্ড টিমের দূর্বলতাগুলো খুঁজে বার করে, তাদের বিপক্ষেও ভালো খেলবে বাংলাদেশ৷

একটা ম্যাচের পর আরেকটা ম্যাচ শুরু হতে যেমন সময়ের পরিবর্তন হয়, ঠিক তেমনি প্রকৃতিতেও পরিবর্তন থাকে৷ বদলে যেতে পারে মাঠের গঠন, পিচ, আবহাওয়া৷ আর এসব বিবেচনায় রেখে একটা দল তার মূল একাদশে পরিবর্তন আনে৷ তবে আপাত দৃষ্টিতে পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই৷ কিন্তু খেলার দিন যদি বৃষ্টি হয়, কিংবা কোনো কারণে কম ওভারের ম্যাচ হয়, সেক্ষেত্রে দলে হয়তো পরিবর্তন আনতে হতে পারে৷ অন্যথায় উইনিং কম্বিনেশন রেখে দেয়াটা শ্রেয়, কারণ আমার মনে হয় তারাই বেস্ট ইলেভেন৷ আর তাতে আত্মবিশ্বাসে কোনো ঘাটতি তৈরি হবে না৷

এ কথা মানতেই হবে, রুবেল দলের অন্যতম সেরা পেসার৷ কিন্তু খেলার কিছু কৌশল থাকে৷ কারণ পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং বিপর্যয় আমরা দেখেছি৷ টপ অর্ডার কোনো কারণে খারাপ করলে বা দ্রুত কয়েকটি উইকেটের পতন হলে, লোয়ার অর্ডারের ওপর নির্ভরশীল হতে হয় দলকে৷ আর সেসব বিবেচনা করেই হয়তো, সাইফুদ্দীনকে দলে রাখা হয়েছে৷ এবং সে পারফর্মও করেছে৷ তবে উইকেট যদি পেস সহায়ক হয়, সেক্ষেত্রে রুবেলের বিকল্প নেই৷ প্রতিপক্ষের দূর্বলতা আর উইকেট পর্যালোচনা করে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ এক্ষেত্রে টিম ম্যানেজমন্টের ওপর আস্থা রাখা উচিত৷

 

রুবেল থাকলে ভালো হতো, মাশরাফির ওপর চাপ কিছুটা কমতো: মোহাম্মদ আশরাফুল

সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৯ থেকে ৪৬, এই কয়েকটা ওভারে যদি আরেকটু ভালো ক্রিকেট খেলা সম্ভব হতো, তবে দলের রান আরো ৩০ বেশি হতে পারতো৷ একটা সময় মনে হচ্ছিল রান ৩৫০/৩৬০ পেরিয়ে যাবে৷ তেমন অবস্থানে ছিলো বাংলাদেশ৷ মাথায় রাখা উচিত, ২০/৩০ রান-ই কিন্তু একটা ম্যাচের ব্যবধান তৈরি করে দেয়৷ শেষ চার ওভারে ৫৪ রান করেছে বাংলাদেশ, সেখানেই তৈরি হয়েছে ম্যাচের আসল পার্থক্য৷ ওই অবস্থায় রান ৫৪ না হয়ে, ৩০ কিংবা ৩৫ হতো, তবে ম্যাচ জেতা অনেক কঠিন হয়ে পড়তো৷ তবে বলতেই হবে, ওই অংশটুকু বাদ দিল পুরো ম্যাচে ভালো খেলেছে বাংলাদেশ৷ পরের ম্যাচগুলোতে সেদিকে মনোযোগী হতে হবে৷

ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনার দরকার নেই৷ যা আছে তাকে এক কথায় পারফেক্ট বলা যায়৷ নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে সবাইকে৷ মাহমুদ উল্লাহ যদি আগে খেলতে পারে, সেটা দলের জন্য ভালো হবে৷ ওইরকম পরিস্থিতিতে মিঠুন খেলতে নেমে ২১ বলে ২১ করেছে৷ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ কারণ মোমেন্টামটা ধরে রাখতে পেরেছিলেন মিঠুন৷ মোসাদ্দেকের ২৬ রানের কথাও আলাদা করে বলা দরকার৷ ওই সময় আক্রমণাত্মক হওয়া দরকার ছিল, মোসাদ্দেক তাই করেছে৷ সব মিলিয়ে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে অসাধারণ টিম গেম হয়েছে৷

এতো চমৎকার জয়ের পর, মনে হচ্ছে না দলে কোনো পরিবর্তন আসবে৷ তবে, রুবেল থাকলে ভালো হতো, মাশরাফির ওপর চাপটা কিছুটা হলেও কমতো৷ তাই, বাংলাদেশ চাইলে একটা ঝুঁকি নিতেই পারে৷ যদিও নেয়া, না নেয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত৷ মোসাদ্দেকের জায়গায় রুবেলকে নিলে খারাপ হয় না৷ কারণ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ আর সাইফুদ্দীন আছে৷ ফলে ওই জায়গায় একজন অতিরিক্ত বোলার নিয়ে খেলার সুযোগ আছে৷ মোসাদ্দেক সাধারণত ৭ নম্বরে ব্যাট করে, সেখানে মিরাজ কিংবা সাইফুদ্দীনকে খুব সহজেই কাজে লাগানো সম্ভব৷ তাই আমার মনে হয়, মোসাদ্দেকের পরিবর্তে একজন পেসারকে দলে জায়গা দিলে, সেটা ভালো হবে৷

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের জন্য, বাংলাদেশ দল যেভাবে খেলছে, সেই খেলাটাই ধরে রাখতে হবে৷ দলের প্রতিটি সদস্যকে যার যার দায়িত্বটা পালন করতে হবে৷ যে কাজটা হয়েছে সাউফ আফ্রিকার বিপক্ষে, ঠিক সেভাবেই সবাইকে লড়াই করতে হবে৷

সাউথ আফ্রিকার তুলনায়, নিউজিল্যান্ড এই মুহুর্তে ভালো দল৷ তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে, একথা মানতেই হবে৷ তাই তাদের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে সেট হয়ে লম্বা ইনিংস খেলতে হবে৷

টিএম, কেএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য