নির্বাচনে জিতলেও ন্যাটো ছাড়বেন না ট্রাম্প
২০ মার্চ ২০২৪আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার জয়ের স্বপ্ন দেখছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ তিনি সত্যি আবার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করলে শুধু অ্যামেরিকা নয়, ইউরোপসহ প্রায় গোটা বিশ্বের উপরই মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির প্রভাব পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ব্রিটেনের দক্ষিণপন্থি টেলিভিশন চ্যানেল ‘জিবি নিউজ' আন্তর্জাতিক বিষয় ট্রাম্পের প্রকৃত অবস্থান জানতে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে৷ ব্রেক্সিট আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কাণ্ডারী এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নাইজেল ফারাজ ট্রাম্পকে ন্যাটোসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন৷
রিপাব্লিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারি মাসে সামরিক জোট ন্যাটো সম্পর্কে যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে ইউরোপে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ ট্রাম্প বলেছিলেন, ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট ব্যয় না করলে তার নেতৃত্বে মার্কিন প্রশাসন কোনো আক্রান্ত দেশের সুরক্ষায় এগিয়ে আসবে না৷ এমনকি রাশিয়াকে এমন দেশের উপর হামলা চালাতে উৎসাহ দিয়েছিলেন তিনি৷ সেই বক্তব্যের ব্যাখা করে ট্রাম্প বলেন, আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, অনেক অর্থ থাকা সত্ত্বেও ন্যাটোর এই সব দেশের সুরক্ষার জন্য অ্যামেরিকার এগিয়ে আসার কোনো অর্থ হয় না৷ ন্যাটোর জন্য অ্যামেরিকা তার ন্যায্য ভাগ দিতে প্রস্তুত, তবে বাকি সবার ঘাটতি মেটাতে চায় না তার দেশ৷ ফারাজের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, সব সদস্য দেশ ন্যায্য ব্যয় করলে অ্যামেরিকা ন্যাটোয় ‘একশ শতাংশ' থেকে যাবে৷
উল্লেখ্য, ন্যাটোর ৩২টি সদস্য দেশের মধ্যে ১১টি দেশ বর্তমানে জিডিপি-র কমপক্ষে দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করছে৷ ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গের মতে, চলতি বছর মোট ১৮টি দেশ সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে৷ তিনি বলেন, সাধারণ সুরক্ষা বলয় সম্পর্কে কোনো সংশয় ন্যাটোকে দুর্বল করে তুলবে৷ ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে বাকি দেশগুলিও আগের তুলনায় নড়েচড়ে বসেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন৷
জিবি নিউজ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডনাল্ড ট্রাম্প তার অন্য কিছু বিতর্কিত মন্তব্যেরও ব্যাখ্যা করেন৷ নির্বাচনে হেরে গেলে গোটা দেশে ‘রক্তগঙ্গা' বয়ে যাবে বলে তিনি যে হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু অ্যামেরিকার গাড়ি শিল্পের ক্ষেত্রে প্রজোয্য৷ বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানির উপর শুল্ক চাপিয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে নিজস্ব গাড়ি শিল্পের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চান ট্রাম্প৷ তিনি ইলেকট্রিক গাড়ির প্রচলন বাড়াতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন৷ তার মতে, এর ফলে মূলত চীনেরই ফায়দা হচ্ছে৷
আবার ক্ষমতায় এলে ট্রাম্প অ্যামেরিকায় বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে আরো জোরালো উদ্যোগের ঘোষণা করেন৷ মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে অ্যামেরিকায় প্রবেশ করলে বেআইনি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রত্যর্পণ করার হুমকি দেন ট্রাম্প৷ বিশেষ করে অপরাধীদের অবিলম্বে বিদায় করতে তিনি বদ্ধপরিকর৷ এ ক্ষেত্রেও তিনি বাইডেনের কড়া সমালোচনা করে চলেছেন৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)