ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের শঙ্কা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯শঙ্কা কতটা বেড়েছে?
শনিবার ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার সঙ্গে সীমান্তে বিদেশি ত্রাণ বহর আটকে দিতে সেনা মোতায়েন করে ভেনেজুয়েলা সরকার৷ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় সেনা ও ত্রাণকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং তিনশ' জন আহত হন৷ এরপর থেকে মার্কিনিদের সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে৷
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ অ্যামেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশ কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিদ্রোহী নেতা গুয়াইদো ভেনেজুয়েলাকে ‘যে কোনো উপায়ে মুক্ত করতে' বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷
সোমবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও ঘোষণা দিয়েছেন যে, গুয়াইদোকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন করবে ওয়াশিংটন৷
ইইউ হস্তক্ষেপ করবে না
সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা কোনো সামরিক হস্তক্ষেপ করবে না৷ ইউরোপের খোলাখুলি এমন অবস্থান পরিষ্কার করাকে খুব সময়োপযোগী বলছেন বিশ্লেষকরা৷ কারণ, গত সপ্তাহান্তের সহিংসতা মার্কিন হস্তক্ষেপকে উসকে দিয়েছে৷ ‘‘২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যে অবস্থা ছিল, আশঙ্কা এরপর বেড়েছে (মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের), কারণ ভেনেজুয়েলার ভেতর সাহায্য ঢোকানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে,'' মনে করেন দক্ষিণ অ্যামেরিকা বিষয়ক বিশ্লেষক গ্রেগরি উইকস৷
ভেনেজুয়েলায় আগে সামরিক হস্তক্ষেপ হয়েছে?
ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওয়াশিংটনের নাক গলানোর নজির আছে অনেক৷ কিন্তু নিকোলাস মাদুরোর এ আমলে যদি সামরিক হস্তক্ষেপ করা হয়, তার সঙ্গে আগের সব হস্তক্ষেপের কোনো তুলনা হবে না, বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷ ‘‘ইতিহাসে কখনোই দক্ষিণ অ্যামেরিকার কোনো সরকার পতনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠায়নি- কখনোই না,'' ডিডাব্লিউকে বলেন ইন্টার-অ্যামেরিকান ডায়লগ, আইএডি-এর পরিচালক মাইকেল শিফটার৷
বছর তিরিশেক আগে পানামায় একবার সেনা পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু বিশ্লেষকরা তার সঙ্গে তুলনা করতে চান না৷ কারণ, পানামার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আরো নিবিড় যোগাযোগ ছিল এবং বর্তমান ভেনেজুয়েলা সংকট থেকে তা অনেক ভিন্ন ও সহজ ছিল৷
এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সামরিক হস্তক্ষেপের শঙ্কা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বলে মনে করেন দুই বিশ্লেষক৷
হামলার ফল কী হতে পারে?
উইকস বিশ্বাস করেন না যে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপ করবে৷ তিনি মনে করেন, নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোরভাবে আরোপ করেই চাপ বাড়াতে চাইবে তারা৷ ‘‘সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়টি সবচেয়ে জঘন্য বলে মনে করি,'' বলেন তিনি৷ এতে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে পড়বে বলে মত তাঁর৷
শিফটারও একইভাবে সামরিক হস্তক্ষেপকে সমাধান হিসেবে দেখেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘কারো কারো মনে হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র ঢুকবে, মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করবে এবং সবাই তাদের সাদরে গ্রহণ করবে, গুয়াইদো অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হবে, নির্বাচন হবে, সবকিছু খুব সহজেই হয়ে যাবে৷
‘‘আমি অতটা জোর দিয়ে এই ধারণা সমর্থন করতে পারছি না,'' যোগ করেন তিনি৷
মাইকেল নিগে/জেডএ