লন্ডনে মুসল্লিদের উপর ভ্যান ‘হামলা', নিহত এক
১৯ জুন ২০১৭লন্ডনের মেয়র জানিয়েছেন, মসজিদগুলোর আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
গতরাতে চালানো হামলায় একজন মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ৷ যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে তাঁর বয়স ৪৮ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা৷ এতে আরও বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা মানুষেরা ভ্যানচালককে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে৷ পরে পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ভ্যানচালককে আটক করে৷ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, আহত ১০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে জানিয়েছেন, ‘‘এই ঘটনার বিষয়ে আলোচনা করতে আজ একটি জরুরি বৈঠক হবে৷'' তিনি আরো জানান, ‘‘পুলিশ এটাকে ‘সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে চিহ্নিত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে৷'' সেইসাথে মে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন৷
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ২০ মিনিটে সেভেন সিস্টার্স রোডে মসজিদের সামনে এই ঘটনাটি ঘটে৷ মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, ‘‘পরিকল্পিতভাবে ওই ভ্যানটি মুসল্লিদের ওপর তুলে দেওয়া হয়৷ সে সময় নামাজ শেষে মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন৷''
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আম্বের রাড জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনাটির তদন্ত করছে সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ড ইউনিট৷'' রাড বলেছেন, ‘‘ঘৃণা আর ত্রাস ছড়িয়ে যারা আমাদের আলাদা করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হতে হবে৷''
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ‘‘আমি হঠাৎ করেই অনেকের চিৎকার শুনতে পেয়ে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি বাইরে ভীষণ গণ্ডগোল, সবাই চিৎকার করে বলছে, ‘একটি ভ্যান মানুষের উপর চড়াও হয়েছে৷' আমি হামলাকারীকে দেখিনি, তবে ভ্যানটা দেখতে পেয়েছিলাম৷''
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘ভ্যানটি ১০ থেকে ১৫ জন মানুষকে চাপা দেয়৷'' আব্দুলসহ আরও কয়েকজন মিলে ভ্যানচালককে পুলিশে সোপর্দ করেন৷ এমসিবি টুইটারে জানিয়েছে, রমজান মাসের আর কয়েকটি দিন বাকি৷ বাকি দিনগুলোতে যেন মুসলমানরা তাঁদের ধর্ম যথাযথ পালন করতে পারেন, সেজন্য নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা৷
গত মাসে ম্যানচেস্টারে বোমা হামলা এবং এ মাসের শুরুতে লন্ডন ব্রিজ ও বারা মার্কেটে হামলার পর থেকে লন্ডনে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেয়া হয়েছে৷ পুলিশও জানিয়েছে, রমজান ও ঈদ উপলক্ষে তাঁরা নিরাপত্তা আরও বাড়াবে৷
ফিনসবেড়ি পার্কের মসজিদটিতে আগে কট্টর ইসলামপন্থিদের আনাগোনা ছিল বলে একসময় এটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল৷ তবে পরবর্তীতে এটা নতুন ব্যবস্থাপকের হাতে তুলে দেয়ার পর পুনরায় খুলে দেয়া হয়৷ এরপর থেকে সেখানে কট্টর ইসলামি আদর্শ চর্চার কোনো খবর পাওয়া যায়নি৷ মসজিদের সাবেক ইমাম ধর্মকে পুঁজি করে সহিংসতা ও ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ব্রিটেনে জেল খেটেছেন, পরে তাকে নিউইয়র্কে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে৷ সেখানে ২০১৫ সালে সন্ত্রাসে মদদ দেয়া অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
এপিবি/জেডএইচ (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)