ভারত-পাকিস্তানের ‘শান্তি সংগীত'
১৫ আগস্ট ২০১৭১৩ জন শিল্পীর সকলেই তরুণ – বা তরুণী; এঁদের মধ্যে চারজন পাকিস্তানের, বাকিরা ভারতের নাগরিক৷ এঁরা একটি ফেসবুক গোষ্ঠী৷ পর পর দু'টি জাতীয় সংগীত ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ' ও ‘জনগণমন অধিনায়ক জয় হে' ছত্র অনুযায়ী গেয়েছেন একক – বা কখনো সখনো যুগ্ম শিল্পীরা বিভিন্ন লোকেশানে, যার মধ্যে রেকর্ডিং স্টুডিও থেকে শুরু করে পাহাড় কিংবা সমুদ্রসৈকত, সব কিছুই পড়ে৷ সকলেরই সুন্দর গলা, তারুণ্য ও আদর্শে ভরা মুখ-চোখ৷
উভয় দেশের মধ্যে যে তিক্ততা ও বৈরিতা বিরাজ করছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই শান্তি সংগীত এক সাহসী, শুধু সাহসী কেন, হয়ত দুঃসাহসী প্রচেষ্টা৷ ভিডিওটির প্রধান চলচ্চিত্রকার রাম সুব্রামানিয়াম হয়ত সেই কারণেই বলেছেন, বহু মানুষ শান্তির পক্ষে গলা তুলতে ভয় পান; তাঁদের ভীতি দূর করাই এই ভিডিওর উদ্দেশ্য৷
দু'দেশেই এমন মানুষ আছেন, যাদের কাছে এ ধরনের শান্তির আহ্বান প্রায় দেশদ্রোহিতার তুল্য বলে গণ্য হবে৷ স্বভাবতই ভিডিওটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলকালাম শুরু হয়ে গেছে৷ এক্ষেত্রে যে ভয়েস অফ রাম-এর প্রযোজক বা শিল্পীরা আর্ট, অর্থাৎ শিল্পের দোহাই তুলে রেহাই পাবেন, এমন নয়৷ ভিডিওর গোড়াতেই একটি মেসেজে বলা হয়েছে: ‘আমরা যখন শিল্পকলার জন্য সীমান্ত খুলে দিই, তখনই শান্তি আসে৷' ভিডিওর শেষের বাণীটি কিন্তু হলো: ‘চলুন আমরা শান্তির জন্য একসঙ্গে দাঁড়াই৷' এক্ষেত্রে মুশকিল এই যে, এই ভিডিওর মর্ম ও তার অর্থ বা তাৎপর্য প্রধানত রাজনৈতিক, সংগীত তার শুধু বাহন মাত্র৷ সীমান্ত খুলে দেবার আহ্বান তো আর শুধু শিল্পকলার জন্য হতে পারে না৷
সব সত্ত্বেও এই ভিডিও দু'দেশের তরুণ প্রজন্মকে আবার বিশ্বের দৃষ্টিতে ফিরিয়ে এনেছে৷ কাশ্মীর সংঘাত বা পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে এর মানবিক দূরত্ব চোখে পড়ার মতো; হৃদয়গ্রাহী এদের সরলতা ও শান্তির সজল আশা৷
এসি/ডিজি