ফ্রান্সে নির্বাচন
১৯ জুন ২০১৭জনমত সমীক্ষায় যে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতার পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছিল, সেই লক্ষ্য অর্জন করতে না পারলেও সংসদের ৫৭৭ আসনের মধ্যে ৩৫১টি দখল করলো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ'র নতুন রাজনৈতিক দল আরইএম ও তার জোটসঙ্গীরা৷ দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোট গ্রহণের পর এবার দেশ শাসনের কাজে মন দিতে পারবেন প্রেসিডেন্ট৷ মাত্র ১৬ মাস আগে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে একজন নেতার ছত্রছায়ায় প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনে এমন সাফল্য নজিরবিহীন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট সহজে এমন ক্ষমতা ভোগ করতে পারেননি৷ অতএব মাক্রোঁ বিনা বাধায় তাঁর প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচি কার্যকর করতে পারবেন – এমনটাই ধরে নেওয়া যায়৷
তবে আসনের বিচারে সাফল্য সত্ত্বেও ৪৪ শতাংশেরও কম ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করায় জনসমর্থন নিয়ে কিছু সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ দেশের দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা কাটাতে তিনি যেসব সাহসি সংস্কার কর্মসূচি চালাতে চান, তার বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে শ্রমিক অধিকার আইনে ব্যাপক রদবদল ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের ফলে অনেক মানুষ অসন্তুষ্ট হবেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চাঙ্গা করে তুলতেও তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চান৷
একের পর এক নির্বাচনে মাক্রোঁ-ঝড়ের ফলে বিরোধী শিবির বিপর্যস্ত৷ রক্ষণশীল দল জোরালো ধাক্কা খেয়েছে৷ মাত্র ২৯টি আসন পেয়ে সমাজতন্ত্রী দল কার্যত নির্মূল হয়ে পড়েছে৷ এমনকি চরম দক্ষিণপন্থি ন্যাশানাল ফ্রন্ট দলের নেত্রী মারিন ল্য পেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও তাঁর দল সংসদে মাত্র ৮টি আসন পেয়েছে৷ তিনি নিজে জীবনে প্রথমবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন৷
এবারের সংসদ নির্বাচনে আরও কিছু চমক রয়েছে৷ এই প্রথম প্রায় ১৫৬ জন নারী সংসদে প্রবেশ করছেন, যা বিদায়ী সংসদের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে৷ এছাড়া তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বও চোখে পড়ার মতো৷ বিদেশি বংশোদ্ভূত অনেক মানুষ জনপ্রতিনিধি হয়েছেন৷ এমন আরও অনেক বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে সংসদ সদস্যদের মধ্যে৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)