জয়ের পথে মাক্রোঁ
১২ জুন ২০১৭ফ্রান্সেরভোটাররা এখনো মাক্রোঁ ম্যাজিকে মন্ত্রমুগ্ধ – এই বাস্তবতা রবিবার সংসদ নির্বাচনের প্রথম পর্বে আবার স্পষ্ট হয়ে গেল৷ আগামী রবিবার দ্বিতীয় পর্বেও এই সমর্থনের জোয়ার অটুট থাকলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশ শাসন করতে এমানুয়েল মাক্রোঁর পথে কোনো রাজনৈতিক বাধাই থাকবে না৷ সদ্য আবির্ভূত এক রাজনৈতিক আন্দোলন যে দল হিসেবে এমন সাফল্য পেতে পারে, অনেক পর্যবেক্ষক তা কল্পনাই করতে পারেননি৷
ফ্রান্সের মূল স্রোতের রাজনৈতিক শিবিরগুলি সংসদ নির্বাচনেও জোরালো ধাক্কা খেয়েছে৷ বিশেষ করে সমাজতান্ত্রিক দল সংসদে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে৷ রক্ষণশীল দল আপাতত কোনোমতে দ্বিতীয় স্থান আঁকড়ে ধরতে পেরেছে৷ সংসদে মোট ৫৭৭টি আসনের মধ্যে মাক্রোঁর আরইএম বা ‘প্রজাতন্ত্র এগিয়ে চলো' দল ও তার জোটসঙ্গী মো-ডেম সম্ভবত ৪০০ থেকে ৪৪৫টি আসন দখল করতে চলেছে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে প্রায় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন৷ গত ৬০ বছরে অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট এমন বিপুল সমর্থন নিয়ে দেশ শাসন করতে পারেননি৷
তবে রবিবার মাত্র ৪৯ শতাংশ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করায় কিছু প্রশ্ন উঠছে৷ প্রেসিডেন্ট হবার পর মাক্রোঁ তাঁর সমর্থকদের মধ্যে একদিকে প্রবল উৎসাহ জাগাতে পেরেছেন৷ অন্যদিকে তাঁর বিরোধীরা নিরাশ অবস্থায় হাল ছেড়ে দিয়ে ভোট দিতেই যাননি বলে মনে করা হচ্ছে৷ মাক্রোঁপন্থি ও মাক্রোঁ-বিরোধীদের মধ্যে এমন বিভাজন দেশের জন্য কতটা মঙ্গলজনক হবে, তা নিয়ে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুলছেন৷
আগামী রবিবার চূড়ান্ত সাফল্য পেলে মাক্রোঁ ফ্রান্সের রাজনীতিতে বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করেছেন৷ রাজনৈতিক আঙিনায় দূর্নীতি ও স্বজনপোষণ বন্ধ করতে তিনি এক প্রস্তাব আনতে চলেছেন, যার ফলে সংসদ সদস্যরা আত্মীয়স্বজনদের চাকরি দিতে পারবেন না এবং নিজেরা কনসালটেন্সির কাজ করতে পারবেন না৷ উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক কালে ফ্রান্সে এমন অনেক কেলেঙ্কারি ঘটেছে৷ এছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে সাহসি সংস্কারের কাজেও হাত দিতে চান প্রেসিডেন্ট৷
রবিবার সংসদ নির্বাচনের প্রথম পর্বে বিপুল সাফল্যের পর প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)