থাকবে না আর কোনো মাছ
১৮ মার্চ ২০১৮মেক্সিকোতে ৭ই মার্চ থেকে ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব সমুদ্র সম্মেলন, যেখানে বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি বিশ্বের ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদরাও হাজির হয়েছিলেন৷ প্রতি বছর মূলত এতে আলোচনা হয় সাগরকে ঘিরে কীভাবে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা যায়৷ কিন্তু এবার বক্তাদের কথায় উঠে এলো কীভাবে সমুদ্র সম্পদ রক্ষা করা যায় এবং সাগরকে বাঁচানো যায়৷
মূলত ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সাগরকে রক্ষা করার বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উঠে আসে আলোচনায়৷ এই পরিকল্পনার নাম দেয়া হয় ‘ব্লু ইকোনমি' বা নীল অর্থনীতি৷ বিশেষজ্ঞ আলেকজান্ডার কস্তো বলেন, ‘‘নীল অর্থনীতি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা, মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশকে রক্ষায় ভূমিকা রাখবে৷'' যেসব মানুষের জীবিকা সাগর-নির্ভর, তাদের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে এর মাধ্যমে৷
বিশ্বের অন্তত একশ' কোটি মানুষ মৎস বা মাছের উপর নির্ভরশীল৷ আর কিছু ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র রয়েছে, যারা কেবল মাছ খেয়েই বেঁচে থাকে৷ এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ বিশ্ব ব্যাংকের পরিবেশ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ক্যারিন ক্যাম্পার জানালেন, ‘‘অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে সমুদ্রের জীববৈচিত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিচ্ছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা পড়ছে ঝুঁকির মুখে৷''
জলবায়ু পরিবর্তনেরকারণে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, অম্লতা বাড়ছে, যা প্রবালের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ বলা বাহুল্য, এই প্রবালপ্রাচীর মাছেদের অন্যতম আবাসস্থল৷ তাই মাছ তাদের আশ্রয় হারাচ্ছে৷
মাছ কমে যাওয়ার আরো একটি বড় কারণ হলো প্লাস্টিক দূষণ৷ সাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ এত বেড়ে গেছে যে, তা পরিষ্কার করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে৷ বিশ্বের অন্যান্য জলাশয় থেকে যে পরিমাণ মাছ ধরা হয়, সাগর থেকে ধরা হয় তার চারগুণ৷
অ্যাকোয়াকালচার হতে পারে সাগরের মাছের বিকল্প৷ এরই মধ্যে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক ‘সি ফুড' অ্যাকোয়াকালচারের মাধ্যমে সরবরাহ হয়৷ ফলে এর মাধ্যমে সমুদ্রের মাছের উপর থেকে চাপ কমানো যেতে পারে৷ সমালোচকরা অবশ্য বলছেন, এই পদ্ধতিতে পরিবেশ দূষণ আরও বাড়বে এবং জীববৈচিত্রের জন্য এটি আরো একটি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে৷ তাই ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকাগুলোকে রক্ষা এবং সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷
ইরেনে বানোস রুইথ/এপিবি
প্লাস্টিক দূষণ ছাড়া মাছ কমে যাওয়ার আর কী কারণ থাকতে পারে? লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷